ডেঙ্গুতে এক দিনে সর্বোচ্চ ভর্তির রেকর্ড মৃত্যু ১৫ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি মাসের ১৭ তারিখ দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন হাজার ১২২ জন। এটি ছিল এ বছরে এক দিনে হাসপাতালে সর্বোচ্চ ভর্তি। গতকাল মঙ্গলবার সেই রেকর্ডও ভেঙে যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ১২৩ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে দেশে ডেঙ্গুতে ৯৪৩ জনের মৃত্যু হলো। আর চলতি মাসে এখন পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত এ রোগে মারা গেলেন ৩৫০ জন।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকায় পাঁচজন ও ঢাকার বাইরে ১০ জন মারা গেছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭৭৪ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোয় দুই হাজার ৩৪৯ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছরে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮০ হাজার ৪৯০ জন এবং ঢাকার বাইরে এক লাখ ১৩ হাজার ৩৯১ জন রয়েছেন।

এর আগে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল গত বছর। এছাড়া ডেঙ্গুতে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে সাতজন এবং ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।

চলতি বছরে ঢাকার পর ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেশি হচ্ছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেশি হলেও এই বিভাগের ছয়টি জেলার মধ্যে শুধু ঝালকাঠিতে কোনো মৃত্যু হয়নি। এই বিভাগে সবচেয়ে বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বরিশাল বিভাগের পর সবচেয়ে বেশি রোগী মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

আট বিভাগের মধ্যে আক্রান্ত ও মৃত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে।

এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তা ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখনও মৃত্যু হয়নি এমন জেলা ৩৬টি। এর মধ্যে রয়েছে গাজীপুর, গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, নেত্রকোনা, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, পাবনা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, ঝালকাঠি, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার। অবশ্য এক জেলার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিতে অন্য জেলায় গিয়ে মারা গেছেন, এমন অনেক নজির রয়েছে।