ঢাবিতে ১০৮৫ আসন কমানোর সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২১-২২) থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তিতে এক হাজার ৮৫টি আসন কমানোর সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটি। অবশ্য আসন কমানোর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) আসন্ন সভায় আলোচনার পর চূড়ান্ত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা ও শ্রেণিকক্ষ থেকে শুরু করে সর্বত্র অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ আছে। গত দুই দশকে অপরিকল্পিতভাবে নতুন নতুন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট খোলা এবং একই অনুপাতে অবকাঠামো না বাড়ানোর ফলে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসন কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সম্প্রতি এক বিশেষ সভায় এক হাজার ১৫টি আসন কমানোর সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটি। এরপর আসনসংখ্যা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সাধারণ ভর্তি কমিটির বিশেষ সভা ডাকা হয়। উপাচার্য আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এএসএম মাকসুদ কামালসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পদস্থ ব্যক্তিরা অংশ নেন।

সভা শেষে মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আসনসংখ্যা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে ডিনস কমিটির সভার সুপারিশটি সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় পর্যালোচনা করা হয়। এরপর সভায় যৌক্তিক আসনসংখ্যা নির্ধারণের বিষয়ে ভর্তি কমিটির সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এ সুপারিশে এক হাজার ৮৫টি আসন কমানোর কথা বলা হয়েছে। সুপারিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনার পর চূড়ান্ত হবে। এরপর সিন্ডিকেট তা অনুমোদন করবে।

অবকাঠামো বাড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ভৌত মহাপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ভৌত মহাপরিকল্পনার আগে একটি একাডেমিক মহাপরিকল্পনা প্রস্তুত করার জন্য আহ্বান জানান। এর পরই তারা আসনসংখ্যা কমানোর উদ্যোগ নেয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও যথোপযুক্ত দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা ও সামর্থ্য এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আসনসংখ্যা পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

‘ঘ’ ইউনিট বাদ দেয়ার উদ্যোগ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পাঁচটি ইউনিটের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়ে থাকে। এগুলো হলো বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর জন্য ক ইউনিট, কলার বিষয়গুলোর জন্য খ ইউনিট, ব্যবসায় শিক্ষার বিষয়গুলোর জন্য গ ইউনিট, চারুকলার বিষয়গুলোর জন্য চ ইউনিট আর সামাজিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর জন্য ঘ ইউনিট। এর মধ্যে ঘ ইউনিটটি বিভাগ পরিবর্তন করার ইউনিট হিসেবে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২০ সাল থেকে বলে আসছে, ঘ ইউনিট বাতিল হবে। এর পেছনে পরীক্ষার বোঝা ও ভোগান্তি কমানোর যুক্তি দিয়ে আসছেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান। গত বছরের নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেছিলেন, একটি ইউনিট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন কৌশল বের করতে হবে কীভাবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষায় আসতে পারেন। একই সঙ্গে কলার শিক্ষার্থীরা কীভাবে ব্যবসায় শিক্ষায় যেতে পারে অথবা ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা কীভাবে কলায় আসতে পারে। এ নীতি ও কৌশল বের করতে পারলে আমরা একটি পরীক্ষার বোঝা কমাতে পারব।