Print Date & Time : 14 August 2025 Thursday 6:20 pm

তরুণ প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্মের জানা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘এ ইতিহাস জানলে শিশু-কিশোররা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। আর সেই সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশকে (তারা) স্বার্থপরের মতো নিজেকে ভালো রাখা, নিজে ভালো থাকার কথা চিন্তা করবে না। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কিছু করার একটা আগ্রহ সৃষ্টি হবে। একটা চিন্তা আসবে। যেটা আমাদের জন্য খুবই দরকার।’

গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে নির্মিত চিত্রকর্ম (স্ক্রল পেইন্টিং) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জাতির পিতার জীবনী নিয়ে ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ চিত্রকর্ম তৈরি করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে, প্রকৃত ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা সেই সময় যারা তরুণ, যুবক, শিশু-কিশোর ছিলেন তারা বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারেনি। এ বিষয়ে আমার মনে হয় আরও সবার একটু নজর দেয়া দরকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস কেন আমরা উদযাপন করি, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বা ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে আমরা হারিয়েছি যেই নির্মম, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বা ৭১-এ যেভাবে গণহত্যা হয়েছেÑসেই সময়ে যে সাহস নিয়ে আমাদের নিরস্ত্র বাঙালি অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে, সেই বিজয়ের সঠিক ইতিহাস এই রকম বহু ঘটনা আমাদের জীবনে হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের শিশু-কিশোর এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের জানানো উচিত।’

গত প্রায় দেড় দশকে বাংলাদেশের উন্নতির কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আমি মনে করি আমাদের এই যে অর্জনগুলো, এ অর্জনের পেছনে যে ত্যাগ-তিতিক্ষা বা যে অর্জনের পেছনে যে অবদান আজকে নিজের ভাষায় কথা বলতে পারা বা নিজের একটা রাষ্ট্র, একটা আলাদা জাতিস্বত্বা আমাদের হয়েছে এই জিনিসগুলো কিন্তু এদেশের মানুষের জানা উচিত। এটা প্রজন্মের পর প্রজন্ম যদি জানতে পারে তাহলে তারাও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে এবং তাদের ভেতরের যে মেধা, জ্ঞান বা শৈল্পিক মন বা মনন এগুলো বিকশিত হবে। শুধু ধন-সম্পত্তির দিকে ছুটে বেড়াবে না বা কবে কোন ব্র্যান্ড পড়বে সেদিকে ছুটে বেড়াবে না। তাদের সেই শিল্পী মনের একটা বিকাশ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

কবি, শিল্পী-সাহিত্যিকদের নিজেদের কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। শিল্প-সাহিত্যের চর্চা অব্যাহত রাখতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে চিত্রকর্ম ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের পট’ তৈরি করায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছে আমাদের বাংলাদেশের সংগ্রাম থেকে অর্জনের যে ইতিহাস, সেই ইতিহাস। শুধু বর্ণমালায় পড়ে না, শিল্পীর তুলিতেও মানুষ সেটা দেখতে পারবে, উপলব্ধি করতে পারবে, জানতে পারবে, শিখতে পারবে। জাতির পিতার জীবনী নিয়ে স্ক্রল পেইন্টিং তৈরি করতে গিয়ে শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ অনেক কষ্ট করেছেন, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় জাদুঘর প্রান্তে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বঙ্গবন্ধুর জš§শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি জামাল আহমেদ, শিল্পী আফজাল হোসেন ও শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ বক্তব্য দেন।