প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা

তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাক নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হলো তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বাড়িয়ে এর সহজলভ্যতা এবং ব্যবহার কমিয়ে আনা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত করতে হলে চলতি অর্থবছর থেকে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ ও একটি শক্তিশালী জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন জরুরি।

গতকাল ‘ইকোনমিকস অব টোব্যাকো ট্যাক্সেশন: পাবলিক হেলথ পার্সপেকটিভ’ শিরোনামে তিন দিনব্যাপী এক অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

গত ৩১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরো ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসির (বিএনটিটিপি) যৌথ আয়োজনে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক। মিটিং সফটওয়ার জুমে এ প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল সমাপনী দিনে প্রশিক্ষক হিসেবে একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা বলেন, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে তামাকজাত দ্রব্য থেকে থেকে রাজস্ব আয় ছিল ২ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা, পরের বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৫১ কোটি টাকায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে তামাকজাত দ্রব্য থেকে সরকার রাজস্ব আয় করেছে ৩০ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা; যা প্রায় সাড়ে ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ আইন পাস, সংশোধনসহ তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রতিটি উদ্যোগে তামাক কোম্পানি রাজস্ব হারানোর ভয় দেখিয়েছে; যা কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়।

দিনের প্রথম ভাগে প্রশিক্ষক হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সারাবিশ্বে অ্যাডভেলরেম করারোপ পদ্ধতির পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হচ্ছে। এতে সরকার লাভবান হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, যথোপযুক্ত পদ্ধতি ও পরিমাণে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বৃদ্ধিসহ সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানি নানা অপকৌশলের আশ্রয় নেয়।

তিন দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক ও ক্যানসার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল হোসেন এবং অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল হিল্লোল।