শেয়ার বিজ ডেস্ক: রক্তপাতহীনভাবে রোববার কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। কার্যত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা তালেবানের হাতে। ফলে পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালেবানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে চায় চীন। গতকাল সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চীন স্বাধীনভাবে আফগান জনগণের নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের অধিকারকে সম্মান করে। আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়তে ইচ্ছুক। খবর: রয়টার্স, আল জাজিরা।
অবশ্য চীন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল, তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরলে স্বীকৃতি দেবে তারা। গত ২৮ জুলাই চীনে গিয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল তালেবানের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও উপ-প্রধান মোল্লা আব্দুল গানি বারাদার, যিনি আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
ওয়াং ই সে সময় তালেবানকে ‘আফগানিস্তানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন, যারা দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে শান্তি, পুনর্মিলন ও পুনর্গঠনে বড় ভূমিকার রাখবে। পাশাপাশি তালেবানকে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে বলেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আফগানিস্তানে দূতাবাস বন্ধ করবে না চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান: এদিকে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও এর জোট দেশগুলো রাজধানী কাবুল থেকে নিজেদের লোকজনকে দ্রুত গতিতে সরিয়ে নিতে কাজ করছে। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে ভিন্ন পথে হাঁটছে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান। তারা ইঙ্গিত দিয়েছে, তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।
এদিকে কাবুলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে চীন। তারা পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করে লোকজনকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তবে তারা তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন রয়েছে বলেও জানানো হয়।
অপরদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, কাবুল থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনার বিষয়ে তাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। আর পাকিস্তানও জানিয়েছে, আপাতত দূতাবাস বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
গত জুলাইয়ের শেষ দিকে চীনে সফর করেন তালেবানের প্রতিনিধিরা। সে সময় তারা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় ওই বৈঠককে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তালেবানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবেই দেখা হয়েছে।