Print Date & Time : 2 August 2025 Saturday 6:28 am

তিতাসের মুনাফা কমে যাওয়া অপ্রত্যাশিত

দেশের গ্যাস পরিচালন ও বিতরণ ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য নাম তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। ১৯৬৪ সালের ২০ নভেম্বর তিতাস গ্যাস কোম্পানির পথচলা শুরু। একটি প্রগতিশীল জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেবার মাধ্যমে ভোক্তাসাধারণের আস্থাভাজন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তিতাস গ্যাস।
৩০ জুন ২০১৮-এ তথ্যমতে, এ কোম্পানির পাইপলাইন ১৩ হাজার ৭৪ কিলোমিটির। ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৪ গ্রাহক নিয়ে ওই সময় বিক্রিতে এ কোম্পানির মার্কেট শেয়ার ছিল ৬১ শতাংশ। ২০০৮ সালে জুনে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পায় বরাবরের মতো মুনাফা করা প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু বর্তমানে কোম্পানিটির কর্মকাণ্ডে জন আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটছে না। ব্যবসা সম্প্রসারণে এগিয়ে থাকলেও এটির মুনাফা কমেই চলেছে। গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘ধারাবাহিকভাবে কমছে তিতাস গ্যাসের মুনাফা’ পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে।
খবরে প্রকাশ, এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা কমেছে ১৬৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মুনাফা কমে আসছে। চার বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা কমেছে ৫৪৯ কোটি টাকা। তবে
মুনাফা কমলেও প্রতিষ্ঠানটির রিজার্ভ ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, যা তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে সর্বোচ্চ। কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা বলেন, কোম্পানির যে পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে, কর্তৃপক্ষ সে হিসেবে লভ্যাংশ দেয় না।
একটি লাভজনক কোম্পানির মুনাফা ধারাবাহিকভাবে কমবে, এটি প্রত্যাশিত নয়। এক বছর মুনাফা কমলেই উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল মুনাফা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। এ বছরের প্রথম দিকে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কাছে (বিইআরসিতে) দেওয়া গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে তিতাস গ্যাস বলেছে, এ বছর ৫৫০ কোটি টাকা মুনাফা করবে। কিন্তু গ্যাসের দাম না বাড়ালে মুনাফা কম হবে। সে কারণে লভ্যাংশ দেওয়া (শেয়ারহোল্ডারদের) যাবে না। আর তাদের দাবিমতো না বাড়ালেও গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। অথচ মুনাফা কমেই চলেছে। বিনিয়োগকারীদেরও প্রত্যাশিত লভ্যাংশ দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে দায়ী ব্যক্তিরা প্রশ্রয় পাবে। যেভাবে প্রতি বছরই মুনাফা কমছে, তাতে কম সময়ের মধ্যে এটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে মুনাফার ধারায় ফেরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে ব্যবস্থা নিতে হবে। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ রিজার্ভধারী কোম্পানি প্রত্যাশিত লভ্যাংশ না দিলে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। বাজারের খেলোয়াড়রা প্রকারান্তরে প্ররোচিত হবে। শেয়ারবাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। সব দিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি।