শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তিতাসের গ্যাসের লাইনে লিকেজ হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন স্থানীয়রা। বৃষ্টি এলেই শহরের মানিকপুর, দোওভোগ, পুরোনে বাসস্ট্যান্ড, ইদ্রাকপুর, মধ্যে কোটগাঁও, পঞ্চসার, নতুনগাঁও, নয়াগাঁও হাতিমারাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা যায় গ্যাসের বুদবুদ। মাসের পর মাস এ গ্যাস লিকেজ থাকলেও অভিযোগ উঠেছে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উদাসীন তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সড়কের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাসের সংযোগ লাইন ফুটো হয়ে যাওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গ্যাস লিকেজের কয়েকটি জায়গায় কেউ কেউ আগুন ও পানি দিয়ে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এছাড়া শহরের মানিকপুর এলাকা থেকে সুপার মার্কেট পর্যন্ত সঞ্চালন পাইপ লাইনের অসংখ্য স্থানে লিকেজ থেকে গ্যাসের উদগিরণ হচ্ছে। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে কার্পেটিং উঠে গিয়ে চলাচলে বিঘœ ঘটে। ভোগান্তিতে পরে এ সড়কে চলাচলরত সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা মালেকুন মাকসুদ বিপুল বলেন, সম্প্রতি দেওভোগ বাজারসংলগ্ন রাস্তায় ভয়াবহ গ্যাস লিকেজ হয়েছে। কে বা কারা যেন সেই লিকেজে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দফায় দফায় কল দিলেও তারা ফোন ধরেনি।
তিতাস গ্যাসের মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ৩ দিন ধরে আমরা হাতিমারা এলাকায় গ্যাস লিকেজের কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় গ্যাস পাইপ লিকেজের কাজ করব।
এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের সমস্যার সমাধান করেছি। রাস্তার এ গ্যাস লিকেজ থেকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।
মানিকপুর এলাকার বাসিন্দা, মো. রোবেল বলেন, আমার দোকান থেকে শুরু করে সামনের একাধিক স্থানে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস লিকেজ হয়ে আছে। বৃষ্টি এলেই বোঝা যায় কী ভয়াবহ অবস্থা। এ গ্যাসের কারণে এ রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে গেল।
আব্দুর নুর তুষার নামের একজন রাত ৯টায় তার নিজের ফেসবুক পোস্টে জানান, পূর্ব দেওভোগ বাজারের সঙ্গের মূল সড়কের নিচে গ্যাস লিকেজ হচ্ছে অনেক দিন ধরে। দিন দিন এ লিকেজের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার অভিযোগ করার পরও তাদের থেকে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মুন্সীগঞ্জ নাগরিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক সুজন হায়দার জনি বলেন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি একটি উদাসীন প্রতিষ্ঠান। তাদের উদাসীনতার কাছে জিম্মি নাগরিকরা। তিতাস শুধু ইস্ট কোম্পানির মতো গ্রাহক থেকে টাকা আদায় করে। গ্রাহক সেবা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। তিতাসের ত্রুটিপূর্ণ সঞ্চালন লাইনের কারণে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্রবেশ পথের সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।