তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে চীনের শিল্পোৎপাদন

শেয়ার বিজ ডেস্ক : চলতি বছরের নভেম্বরে চীনের শিল্পোৎপাদন গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রত হারে সম্প্রসারিত হয়েছে। এ সময় সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। কভিড-১৯ এর ধাক্কা সামলে দেশটির অর্থনীতিতে যে গতি ফিরেছে গতকাল সোমবার প্রকাশিত এ উপাত্ত সে বার্তাই দিচ্ছে। খবর: রয়টার্স।

প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অচল অর্থনীতির মধ্যে চীনই প্রথম ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক উৎপাদন তথ্য বিশ্লেষণ বলছে দেশটির অর্থনীতি মহামারির পূর্ববর্তী অবস্থানে চলে এসেছে।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, নভেম্বরে দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজার’র ইনডেক্স (পিএমআই) সূচক বেড়ে ৫২ দশমিক এক পয়েন্ট হয়েছে। অক্টোবরে যা ছিল ৫১ দশমিক চার পয়েন্ট। ২০১৭ সালের পর গত মাসের এ পিএমআই সর্বোচ্চ। রয়টার্সের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল পিএমআই হবে ৫১ দশমিক পাঁচ পয়েন্ট। অর্থাৎ প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করছে চীনের উৎপাদন খাত। সাধারণত ৫০ পয়েন্টের ওপরে থাকলে কোনো দেশের উৎপাদন খাত ইতিবাচক ধারায় আছে ধরা হয়ে থাকে।

এদিকে টানা ৯ মাস ধরে সেবা খাতের কার্যক্রম বেড়েছে। এ খাতে পিএমআই নভেম্বরে ৫৬ দশমিক চার পয়েন্ট হয়েছে, যা ২০১২ সালের জুনের পর সর্বোচ্চ। অক্টোবরে যা ছিল ৫৬ দশমিক দুই পয়েন্ট। 

করোনা প্রতিরোধে বহাল লকডাউনের কারণে বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাপক সংকোচন হয় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ এ অর্থনীতির। দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এপ্রিল থেকে আবার প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে এসেছে। এ সময় থেকে মূলত চীন তার অর্থনীতি খুলতে শুরু করে। ফলে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে তিন দশমিক দুই শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে অর্থনীতি ছয় দশমিক আট শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল, যা ছিল ১৯৯২ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ত্রৈমাসিক অবস্থা ছিল।

লকডাউন শিথিল করার পাশাপাশি অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে অন্যতম অবদান রেখেছে সরকারের কর ছাড়সহ অর্থনীতির উন্নয়নে সহাযতার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ। বিশেষজ্ঞরা যা ধারণা করেছিলেন তার চেয়েও চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভালো হতে শুরু করেছে। করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় বাধ্য হয়েই কড়াকড়ি আরোপ করেছিল চীন। ফলে বেশ কয়েক মাস ধরে দেশটির বিভিন্ন কারখানা ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। তবে করোনার প্রকোপ যখন কমতে শুরু করল তখন দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে ধীরে ধীরে দেশজুড়ে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়। এমনকি সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ট্যাক্স নেওয়াও বন্ধ রাখে।

করোনাভাইরাস চীনের অর্থনীতিতে যে ক্ষতি করেছে, তা অন্য দেশগুলোর জন্যও ব্যাপক উদ্বেগের বিষয়, কারণ চীন হলো এ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারখানা। বড় বড় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মাঝারি ও ছোট সব ধরনের কারখানার পণ্য উৎপাদিত হয় এখানে।