তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বাড়ছে বিদ্যুতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্রুত কমে আসছে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ। ফলে ব্যক্তি খাতে সরবরাহ ও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে আমদানি করা হচ্ছে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস। তবু দেশীয় গ্যাসের তুলনায় এ গ্যাসে খরচ বেশি। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও বাড়বে ব্যয়। সে ব্যয় মেটাতে আগামী অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বাড়ছে ভর্তুকি। চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার কোটি টাকা বাড়তি ভর্তুকি দেওয়া হতে পারে আগামী অর্থবছরে।
জানা যায়, চলতি অর্থবছরে বিদ্যুতে ভর্তুকি রয়েছে ছয় হাজার ২০০ কোটি টাকা। যদিও এ অর্থের পুরোটা এখনও ছাড় হয়নি। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ভর্তুকির ওই অর্থ ছাড় হবে। আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছর বিদ্যুতে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকির প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। যদিও বাজেটে এ অর্থ ঋণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ভর্তুকিতে রূপ নেয়।
জানা যায়, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মোট যে ব্যবহার রয়েছে, তার ৪০ শতাংশ যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে। এ পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া দেশের মোট যে রিজার্ভ ছিল, তার অর্ধেক এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। যে গ্যাস এখনও উত্তোলন বাকি রয়েছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ বছর চাহিদা মেটানো সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি খাতে শিল্পোৎপাদন চলমান রাখা ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মেটাতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে আমদানি করা গ্যাস আসতে শুরু করেছে। চলতি মাসের শেষদিকে সেখান থেকে গ্যাস সরবরাহ করার কথা।
দেশে উৎপাদিত গ্যাসের সঙ্গে মিশ্রণ করে এ গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে গ্যাসের দাম বেড়ে যাবে। দাম সহনীয় রাখতে এ খাতে প্রযোজ্য সম্পূরক শুল্ক মওকুফ করেছে সরকার। এতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব কমবে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ছাড় দেওয়ার পরও বর্তমান দামের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেড়ে যাবে গ্যাসের দাম। আর তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তার দামও বেড়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি বাড়িয়ে বিদ্যুতের দাম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।