Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 10:49 pm

তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে জেলেদের নদীকেন্দ্রিক জীবন

ফারুক আলম, লালমনিরহাট: দেশের বৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা। ১৯৯০ সালে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। উত্তরাঞ্চলে কৃষির বড় একটি অংশ এ প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্য ছিল তখন। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, এ সেচের পানি দিয়ে কৃষির তেমন কোনো উপকার হচ্ছে না। একদিকে বর্ষায় জলে যেমন টইটুম্বর, অপর দিকে শুষ্ক মৌসুমে শুধু বালি।

কৃষির পাশাপাশি নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকার মানের উন্নয়ন নেই। গত শুক্রবার তিস্তার দোয়ানী ব্যারাজ পয়েন্টে দেখা মিলেছে ২২ জন জেলের। তারা অস্থায়ী তাঁবু টেনে থাকা-খাওয়াসহ মাছ ধরছেন। একদম জলকপাটের মুখে। ২২ জেলের জালে ওঠা মাছ এক জায়গায় রেখে বিক্রি করা হয়। তারা ছোট নৌকায় চড়ে হাত জাল দিয়ে মাছ ধরেন। ২১ জন জেলে মাছ ধরে, একজনের একজনের বিক্রি করেন।

তাদের জালে তিস্তার বিখ্যাত বৈড়ালি মাছ ছাড়াও বাইম, তারাবাইম ও টেংরাসহ নানা জাতের পুঁটি উঠছে। মঝে মধ্যে রুই, কাতল আর বোয়াল মাছ উঠছে। কথা হয় কয়েকজন জেলের সঙ্গে। আব্দুর রহমান জানান, কোনোমতে মাছ ধরি। এ দিয়ে সংসার চালাই। ছেলেমেয়েদের খরচ জোগাই।

আব্দুর রহমান আর বলেন, আমরা ২২ জন মিলে মাছ ধরি। একজন থাকি বিক্রির জন্য। পানি যখন কমতে শুরু করে, তখন আমরা মাছ ধরা শুরু করি। বৈশাখের পর পানি বাড়তে থাকে। ভরা বর্ষায় পানি বেশি হলে, এখানে মাছ পাওয়া যায় না। তখন বাড়িতে বসে থাকি, গৃহস্থালি কাজ করি। সন্ধার পর আমরা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ভাগ পাই। এ দিয়ে চলে সংসার। মানুষের বাড়িতে দিনমজুর খাটতে হয় না।

রহমত আলী বলেন, প্রতিদিন সমান মাছ পাওয়া যায় না। আজকে বেশি মাছ উঠেছে। আমরা কয়েকদিন পর মাছ ধরা বন্ধ রাখব। তারপর খালেবিলে পানি হলে, সেখানে মাছ ধরতে যাব।

মাছের ক্রেতা লাইলি ও খুরশিদ বলেন, এখানে দেশি ছোট মাছ পাওয়া যায়। আমাদের এলাকার বৈড়ালি মাছ বিখ্যাত। এছাড়া কম দামে টাটকা মাছ পাওয়া যায়। তাই এখানে কিনতে আসি।