তীব্র গরমে মরছে মুরগি বিপাকে পোলট্রি খামারিরা

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : বিগত কয়েকদিন ধরে থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। স্বস্তি নেই জনজীবনে। বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষি ও পোলট্রি খামারে। এমন পরিস্থিতিতে প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম আর দাবদাহে মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। আর এতে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা।

পোলট্রি খামারিদের ভাষ্য, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে মুরগি মারা যাচ্ছে। প্রতিটি খামারের ঘরের চালা টিনের। আর রোদের তাপ টিনে বেশি লাগে। যে কারণে মুরগির গরমও লাগে বেশি। এই গরমে দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার মুরগির শরীরে পানি ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। গরমে মুরগি ছটফট করছে। স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের চরৎত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে প্রায় শতাধিক ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে। খামারে মুরগি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কর্মচারীরা। কেউ মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করছেন, কেউবা মারা যাওয়া মুরগিগুলো খুঁজে খুঁজে এক জায়গায় জমা করছেন। খামারের ভেতর ঠান্ডা রাখতে চলছে বৈদ্যুতিক ফ্যান। কিন্তু তাতেও যেন কাজ হচ্ছে না। মুরগিগুলো হাঁসফাঁস করছে গরমে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মীরসরাইয়ে মুরগির খামার রয়েছে প্রায় ৯শ ২০টি মতো খামার আছে। তার মধ্যে শুধু ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ৮শ ৫০টি। আর বাকিগুলো লেয়ার মুরগি খামার। এসব খামারে ব্রয়লার ও লেয়ার মিলে মুরগি রয়েছে প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজারের মতো। তবে প্রচণ্ড গরমে তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার তথ্য মীরসরাইয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগে কাছে নেই।

পোলট্রি খামারের শ্রমিক শুভঙ্কর দাস জানান, গরম শুরুর পর থেকেই খামারে মুরগির ছটফটানি শুরু হয়েছে। ফ্যানের বাতাসেও ঘর ঠান্ডা হচ্ছে না। প্রতিদিন কয়েকবার করে মুরগির শরীরে পানি ছিটিয়ে দেয়া হচ্ছে। এরপরও মুরগি মারা যাচ্ছে। তাদের খামারে দুই হাজার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন ২৫-৩০টি মুরগি মারা যাচ্ছে।  সর্বশেষ গত শনিবার ৩০টি মুরগি মারা গেছে।

ইছাখালী ইউনিয়নের চরৎত গ্রামের ব্রয়লার মুরগির খামারের মালিক বিপ্লব দাস বলেন, গরম শুরুর পর থেকে মুরগিকে ওষুধ ও স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। তারপরও মুরগি মারা কমানো যাচ্ছে না। দুঃখ জনক হলেও সত্যি যে, আমাদের এখানে প্রায় শতাধিক খামার থাকলেও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোনো লোক এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাকিরুল ফরিদ বলেন, খামারের ঘরের টিনের চালে চটের বস্তা বিছিয়ে পানি ঢালা, মুরগির শরীরে পানি ছিটানো এবং মুরগিকে স্যালাইনসহ ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি দিতে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে দুপুরে অতিরিক্ত গরমের সময় খাবার না দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।