ত্রাণ-জিম্মি ইস্যুতে চুক্তি ইসরায়েল-হামাসের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় ত্রাণের সরবরাহ আরও বাড়ানো এবং উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের সুরক্ষা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল ও হামাস। খবর: বিবিসি।

কাতার ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় গত মঙ্গলবার দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিজেদের হাতে আটক জিম্মিদের শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে হামাস। বিনিময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় আরও বেশি ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ করতে দেবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরর মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি এক ঘোষণায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি এ প্রসঙ্গে বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। আমরা আশা করছি, এই সমঝোতা আরও বেশি জিম্মির মুক্তির পথ প্রশস্ত করবে।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণসামগ্রী এবং হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের জন্য ওষুধের প্রথম চালানটি বুধবার কাতারের রাজধানী দোহা থেকে মিসরের উদ্দেশে পাঠানোর কথা। তারপর মিসর সেখান থেকে ত্রাণ ও জিম্মিদের জন্য ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যাবে গাজায়।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনও তাদের কাছে আটক।

মানবিক বিরতি শেষ হওয়ার পর হামাসের হাতে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা একটি চিঠি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভাকে। সেই চিঠিতে তারা বলেছিলেন, জিম্মিদের অনেকেরই নিয়মিত ওষুধ প্রয়োজন এবং যদি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা না দেয়া হয়, তাহলে এই জিম্মিদের কয়েকজনের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে।

গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছিলেন, এ ইস্যুতে একটি মীমাংসায় পৌঁছাতে মোসাদের (ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা) প্রধান নির্বাহী ডেভিড বার্নিয়া কাতার সফরে গিয়েছেন। মঙ্গলবার চুক্তি স্বাক্ষরের তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, যাদের প্রচেষ্টার কারণে এই সমঝোতা সম্ভব হয়েছে, তাদের সবাইকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ ইসরায়েলি এবং বিদেশি নাগরিককে। জবাবে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত ১০০ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।