নিজস্ব প্রতিবেদক: দর্শনাগামী দুটি এসি বাসের ৫ জন যাত্রীর রেক্টাম ও ৭ জন যাত্রীর ব্যাগেজ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল বাবুবাজার ব্রিজ থেকে পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহন থেকে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করে। এ সময় তিন ভারতীয় নাগরিকসহ ওই ১২ যাত্রীকে আটক করা হয়। কাস্টমস গোয়েন্দার মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফখরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় গাবতলীর মাজার রোড থেকে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে দর্শনাগামী পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনের দুটি এসি বাসযোগে ও যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালান হতে পারে। এ তথ্যের ভিত্তিতে উপ-পরিচালক সানজিদা খানমের নেতৃত্বে কাস্টমস গোয়েন্দার একটি দল কেরানীগঞ্জ পুলিশের সহায়তায় রাত ১১টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ চুলকুটিয়া ও ঢাকার ঝিলমিল হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেয়। রাত ৩টার দিকে পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনের এসি বাস দুটি গোয়েন্দা টিমের নজরে আসে। পরে গাড়ি থামিয়ে পুলিশের সহায়তায় টিমের সদস্যরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে বাসের বিভিন্ন স্থান ও যাত্রীদের তল্লাশি করেন। প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা স্বর্ণবার থাকার কথা অস্বীকার করেন।
পরবর্তীকালে যাত্রীদের শরীরের ভেতর স্বর্ণ আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ১২ জন যাত্রীকে পার্শ্ববর্তী ঝিলমিল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করা হলে ১২ জনের মধ্যে ৫ জনের রেক্টাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া বাকি ৭ জনের লাগেজের হ্যান্ডেলব্যাগ, মানিব্যাগ, কাঁধ ব্যাগের বিভিন্ন অংশে বিশেষভাবে লুকানো অবস্থায় মোট ৬৩৭ দশমিক ১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা মাত্র। তবে যাত্রীদের কাছে এসব স্বর্ণবার আমদানি বা কেনার স্বপক্ষে বৈধ কোনো দলিলাদি পাওয়া যায়নি।
মহাপরিচালক আরও জানিয়েছেন, পাসপোর্ট অনুসারে আটককৃত যাত্রীরা হলেনÑরাহাত খান (৩৩), মোহসিন আল মাহমুদ (২৯), কাজী মামুন (৩৪) ও সৈয়দ আমীর হোসেন (৩৪), শামীম (২৩), মামুন (৩৭), বশির আহমেদ কামাল (৩৭), মামুন সরকার (৩৭), আতিকুর রহমান মীনা (৪২)। ভারতীয় তিনজন নাগরিক হলেনÑনবী হুসাইন (৪৬), শাহাজাদা (৪৭) ও মোহাম্মদ ইমরান (৩৭)। সব স্বর্ণ উদ্ধার কার্যক্রম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সম্মুখে সম্পন্ন করা হয়। জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত আসামিদের পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় আটককৃত স্বর্ণবারসহ কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, সদর দপ্তর, ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
এ বিষয়ে বিভাগীয় মামলা দায়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।