রুবাইয়াত রিক্তা: পুঁজিবাজারে পতনের ধারাবাহিকতায় গতকাল আরও বড় পতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১২ শতাংশ। ৭৪ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। দর বেড়েছে ৫৭টি বা ১৬ শতাংশ কোম্পানির। তারল্য সংকট ও আস্থা সংকটে এমনিতেই পুঁজিবাজার বছরজুড়ে ভল্লুক গতিতে চলছে। এর মধ্যে আবার শুরু হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির বছর শেষের ঘোষণা বা প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ। বিভিন্ন কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করতে না পারায় শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে। গত রোববার ২৫ কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর ফলে গতকাল এসব শেয়ারের দরে কোনো সার্কিট ব্রেকার বা সীমা আরোপিত না থাকায় বড় ধরনের দর সমন্বয় হয়, যার প্রভাবে বড় পতনের কবলে পড়েছে পুঁজিবাজার।
গতকাল সব খাতেই বড় দরপতন হয়েছে। একটি কোম্পানিরও দর বাড়েনি, এমন খাতের তালিকায় উঠে আসে সিমেন্ট, কাগজ ও মুদ্রণ, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। ১৮ শতাংশ বা ৫৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে শীর্ষে ছিল বিমা খাত। এ খাতে ৩৬ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স ও ঢাকা ইন্স্যুরেন্স দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশে অবস্থান করে। এসব শেয়ারের দর চার থেকে সাত শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের প্রায় ১৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়। অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে ৫০ পয়সা। প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ১৫ শতাংশ। এ খাতে ১৮ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। ন্যাশনাল টিউবসের সোয়া ১৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দরপতন হয় সাড়ে ১৫ টাকা। সাড়ে সাত শতাংশ বেড়ে মুন্নু জুট স্টাফলার্স দরবৃদ্ধিতে চতুর্থ অবস্থানে উঠে আসে। ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয় ১২ শতাংশ। এ খাতে ১৮ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। স্কয়ার ফার্মার প্রায় সাত কোটি টাকা লেনদেন হয়, দরপতন হয় ৭০ পয়সা। সিলকো ফার্মার সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে এক টাকা ১০ পয়সা। বস্ত্র খাতে লেনদেন হয় ১০ শতাংশ। এ খাতে ১৩ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। ভিএফএস থ্রেড ডায়িংয়ের প্রায় সাত কোটি টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। কোম্পানিটি দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশের তালিকায় অবস্থান করে। সাড়ে সাত শতাংশ বেড়ে মেট্রো স্পিনিং দরবৃদ্ধিতে তৃতীয় এবং সাড়ে চার শতাংশ বেড়ে নবম অবস্থানে ছিল মতিন স্পিনিং। এছাড়া দরবৃদ্ধির শীর্ষ দুটি কোম্পানি হচ্ছে সিরামিক খাতের স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ও মুন্নু সিরামিক। মাত্র পাঁচ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করায় গতকাল স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের শেয়ারদর ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা বেড়েছে। ২০১৮ সালে কোম্পানিটি দুই শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। ২০১৭ সালে লোকসানে থাকায় লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়। ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত ও ছয় কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির শেয়ার এরই মধ্যে অতিমূল্যায়িত। এ শেয়ারটি গতকাল সবশেষ লেনদেন হয় ৫০৭ টাকায়। এছাড়া মুন্নু সিরামিকের দর ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়েছে।