Print Date & Time : 1 September 2025 Monday 6:14 am

দাদনের টাকা আদায়ে নারীকে বাঁশঝাড়ে বেঁধে নির্যাতন, স্বামীর আত্মহত্যা

প্রতিনিধি, বগুড়া: দাদনের টাকা আদায় করতে এক নারীকে ধরে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বাঁশ ঝাড়ে বেঁধে নির্যাতন করে দাদন ব্যবসায়ী। পরে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ওই নারী মুক্তি পেলেও লোকলজ্জায় তার স্বামী আব্দুল মালেক (৪০) আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ দাদন ব্যবসায়ী গোলজার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাতে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার পার রানীরপাড়া গ্রামে। আব্দুল মালেক ওই গ্রামের পার রানীর পাড়া গ্রামের মৃত হবিবর রহমানের ছেলে। তিনি অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

গতকাল রোববার গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আব্দুল মালেকের স্ত্রী রিমা বেগম জানান, গত চার মাস আগে দেড় ভড়ি স্বর্ণের গহনা ও  ব্যাংকের  চেকের দুইটি পাতা বন্ধক রেখে একই গ্রামের গোলজার হোসেনের কাছে ৩৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। গোলজার হোসেন ৩৬ হাজার টাকার বিপরীতে সুদসহ দেড় লাখ টাকা দাবি করছিলেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি বাবার বাড়ি একই উপজেলার উনচুরখী গ্রামে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে দাদন ব্যবসায়ী গোলজার হোসেন তাকে ধরে নিয়ে গ্রামের একটি বাঁশ ঝাঁড়ে বেঁধে রেখে নির্যাতন চালায়। রাতেই গোলজার হোসেন বাড়িতে গিয়ে রিমার স্বামীকে খবর দেয় সুদসহ দেড় লাখ টাকা না দিলে তার স্ত্রীকে বাঁশঝাড়ে রাতভর ধর্ষণ করা হবে। এদিকে এ খবর পেয়ে রিমার বাবা ৭৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে দাদন ব্যবসায়ীকে দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য এক মাস সময় নেন। টাকা পেয়ে রাত দুইটার সময় রিমা বেগমকে ছেড়ে দেয়া হয়। এদিকে ক্ষোভে এবং লজ্জায় শনিবার রাত দুইটার পর আব্দুল মালেক নিজ ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। রোববার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামের লোকজন দাদন ব্যবসায়ী গোলজার হোসেনের বাড়ি ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গোলজার হোসেনকে আটক করেন এবং মালেকের মরদেহ উদ্ধার করেন।

ওসি সনাতন সরকার জানান, এ ঘটনায় রিমা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গোলজার হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।