প্রতিনিধি, দিনাজপুর: দিনাজপুরে গতকাল বুধবার দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ৯ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চার দিন ধরেই এ অঞ্চলে চলা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের ফলে কনকনে হিমেল ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় এবং কুয়াশার প্রকোপে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অসহায় হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষেরা।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সকাল ৬টায় দিনাজপুরে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ছিল চার-পাঁচ কিলোমিটার, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১০ কিলোমিটার গতিতে ধাবিত হয়।
কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় খেটে খাওয়া মানুষ। ঠাণ্ডায় ঘর থেকে বের হতে না পেরে কোথাও কাজের সন্ধানে যেতে পারছেন না তারা।
শহরের ষষ্টিতলা মহল্লার নারী শ্রমিক জমিলা খাতুন ও খোয়া ভাঙা শ্রমিক হেদায়েত উল্লা বলেন, কুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে আমরা ঘর থেকে বেরই হতে পারছি নাÑকাজ পাব কীভাবে, খাব কী জানি না। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়েই মরতে হবে। তারা বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজখবর নেয়নি।
বিরল উপজেলার কোকাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ইফতেখার আহম্মেদ বলেন, প্রচণ্ড শীতে আমাদের জবুথবু অবস্থা। এরই মধ্যে এক সপ্তাহ আগে বৃষ্টি হওয়ায় আবাদি ফসল নিয়েও আমরা চিন্তায় পড়েছি।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, আজ (গতকাল) দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা দিনাজপুরে সকাল ৯টায় রের্কড করা হয়েছে ৯ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূর্যের তাপমাত্রা ১৭ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়, যা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়েও অনেক কম। তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য জেলায় সূর্যের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও দিনাজপুরে অনেক কম। আগামী ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালিদ মাহমুদ জাকী জানান, শীতার্ত মানুষকে সহযোগিতা করতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ৬০ হাজার কম্বল, শিশুদের শীত নিবারণের জন্যে ২০ হাজার সেট শীতের কাপড় এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় অসহায় মানুষকে সহায়তার লক্ষ্যে এক কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।