ইউনিসেফ: বিভিন্ন ইভেন্ট ও কার্যক্রম বাতিলের কারণে হতাশায় ভুগছে এমন শিশুদের তাদের অভিভাবকরা কীভাবে সহায়তা করতে পারেন? শিশুদের দুঃখ পেতে দিন এবং এর জন্য তাদের দোষী করার চেষ্টা করবেন না। ‘অন্য অনেক মানুষ তোমার চেয়েও খারাপ’ শিশুদের এমনটি বলবেন না। এতে করে তারা দুঃখ পাবে এবং নিজেকে দোষী মনে করবে! এটি ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসবে না। তাদের বলুন, ‘তুমি সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছ। এটা সত্যিই খারাপ। তুমি তোমার বন্ধুদের মতো হতে যাবে না। তুমি তোমার কলেজ ক্যাম্পাসে বসন্ত কাটাতে যাচ্ছ না। যে কনভেনশনটিতে যাওয়ার জন্য তুমি ছয় মাস ব্যয় করেছিলে, সেটিতে তুমি যাচ্ছ না।’ একজন কিশোর-কিশোরীর জীবনে এগুলো বড় রকমের ক্ষতি এবং প্রাপ্তবয়স্কদের অন্য যে জিনিসটি মনে রাখতে হবে তা হলো, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আছি, তবে আমরা এর আগে এমন পরিস্থিতির মুখামুখি কখনও হইনি। তারা এর আগে এমনটি কখনও দেখেনি এবং তারা আরও কম বয়সী। ১৪ বছর বয়সের জীবনে চার মাসের বাধাগ্রস্ততা তাদের জীবনের একটি বড় অংশ। তারা যত দিন বেঁচে থাকবে তত দিন এটি মনে রাখবে। আমাদের চেয়ে এটি তাদের জন্য একটি বড় বিষয়। কিশোর-কিশোরীর জীবনে এক বছর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জীবনের সাত বছরের সমান। তাই এই ক্ষতির ক্ষেত্রে আমাদের সহানুভূতি থাকতে হবে। এটি তাদের পুরো জীবনের জন্য একটি হাইস্কুল থেকে পাস করার মতো। এটি ছিল তাদের পুরো জীবনের ক্যাম্পাসে এক ঝলক বসন্ত। এগুলো বড় ধরনের ক্ষতি। এমনকি তারা বিপর্যস্ত না হলেও কিশোর-কিশোরীদের কাছে এটি সত্যিই মন খারাপ হওয়ার বিষয়। এই মুহূর্তে কিশোর-কিশোরীরা যেভাবে শোক পালন করছে এবং হতাশ হয়ে পড়ছে, সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়ার জন্য আমি অভিভাবকদের অনুরোধ করব। প্রায় ছয়জন কিশোর-কিশোরী অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে স্কুল থেকে ফিরে যাচ্ছিল। আমি তাদের বললাম, ‘দুঃখ পাওয়া স্বাভাবিক। অবস্থাটা সত্যিই বেদনাদায়ক, তাই তোমাদের দুঃখ পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’ যখন বেদনাদায়ক অনুভূতি আসে, তখন অপেক্ষা করাই একমাত্র উপায়। যখন আমরা মানুষজনকে দুঃখ পেতে দিই, সাধারণত তারা আরও দ্রুত ভালো বোধ করে। সুতরাং সহানুভূতি ও সমর্থন তাদের প্রাপ্য। প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে তাদের সহানুভূতি ও সমর্থন দেয়াই আমাদের কাজ। মনে রাখতে হবে তারা সঠিক প্রতিক্রিয়াই দেখাচ্ছে।
কিশোর-কিশোরী মনোবিজ্ঞানী, মাসিক নিউইয়র্ক টাইমসের কলাম লেখক ডা. লিসা ডামুরের পরামর্শ অবলম্বনে। ইউনিসেফ