নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। বিপরীতে দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে। তবে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬২ দশমিক ৭২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৫ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৭০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে লেনদেনে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৯৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৪০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৯ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৬৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড’ ক্যাটেগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র তিনটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ২০টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৩টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬ হাজার ৯৮৮টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ১৪ হাজার ৮৭৫ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৯৪টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৩৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১০ কোটি ১১ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতন এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের গতিবিধি কেমন থাকে, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।