প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা) : দোরগোড়ায় দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে প্রতিমা তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। শেষ সময়ে চলছে প্রতিমা রংতুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নেয়ার কাজ। এক দিন আগে হবে সাজসজ্জা। এসব কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জানান, আগামী ১৯ অক্টোবর শুরু হবে দুর্গাপূজা। শেষ হবে ২৪ অক্টোবর। এ বছর ধামরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ২২০টি মণ্ডপে ও সাভারে ১২৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এক মাস আগে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়।
সরেজমিনে মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, দুর্গাদেবীর প্রতিমার সঙ্গে শোভা পাচ্ছে গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুর, সিংহ, মহিষ, মহাদেব ও কার্তিকের প্রতিমা।
ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় ঠাকুরবাড়ির মণ্ডপে গিয়ে কাজ করতে দেখা যায় মৃৎশিল্পী সম্পদ পাল ও তার সহযোগীদের। কর্মব্যস্ততায় কথা বলার ফুরসত নেই তার। সম্পদ পাল বলেন, এ বছর আরও কয়েকটি প্রতিমার কাজ করেছি। খুব বেশি সময় হাতে নেই। তাই দিনরাত কাজ করছি।
বারবাড়িয়া সার্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিলয় চন্দ্র দাস (শ্যামল) বলেন, ঠাকুরবাড়িতে বহু বছর ধরে পূজা আয়োজন করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছর এটির কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারেও আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি। পূজার সমন্বয়ক দীপক চক্রবর্তী বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ও আনন্দের মধ্য দিয়ে সবাই মিলে উৎসবটি পালন করতে পারব বলে আশা করছি।
ধামরাইয়ের কায়েতপাড়ার ঐতিহ্যবাহী রায়বাড়ির সদস্য শ্যামল রায় জানান, কায়েত পাড়ার রায় বাড়িতে প্রায় ৪০০ বছর ধরে দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। তিনি বলেন, ‘সার্বজনীন এই পূজা সবার সার্বিক সহযোগিতা নিয়েই পালন করি আমরা।’
উপজেলার মাধব মন্দির ও ধামরাই উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন জানান, ১৯ অক্টোবর মহা পঞ্চমীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব। একক উপজেলায় এত বেশি পরিমাণ পূজা ধামরাইতেই হয় বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় ২২০টি মন্দিরে দুর্গোৎসবের প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে।’
নন্দ গোপাল জানান, প্রশাসন থেকেও সার্বিক নিরাপত্তার জন্যে এরই মধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছর যে অনুদান বা উপহার দেয়া হয়, তা প্রক্রিয়াধীন। তালিকা অনুযায়ী মণ্ডপ বা মন্দির কর্তৃপক্ষকে উপহার দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দুর্গাপূজার কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রশাসনিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছর উপজেলায় সবমিলিয়ে ২২০টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসব মন্দিরে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের প্রচুর ভক্ত আসেন। ফলে এসব মন্দিরের নিরাপত্তায় কড়া ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, পূজা নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।