Print Date & Time : 3 September 2025 Wednesday 2:30 pm

দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে তিস্তা ব্যারাজ

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী: নীলফামারী অংশের তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট ও স্থাপনা সংস্কারের ফলে তিস্তাপাড়ে দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ছড়িয়েছে। রং-তুলির কাজ শেষ করায় এখন ব্যারাজ এলাকাকে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনস্থল হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। সম্প্রতি ব্যারাজ এলাকায় পর্যটক উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও দৃষ্টিনন্দন এ কাজে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) সাফল্যে একটি স্বার্থন্বেষী মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জানা যায়, তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প এবং বাংলাদেশ সরকারের কেপিআইভুক্ত একটি প্রথম শ্রেণির স্থাপনা। এখন পর্যন্ত ব্যারাজটি সম্পূরক সেচের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তরবঙ্গের বৃহত্তর রংপুর বিভাগের অবহেলিত জনপদের জন্য এটি দারিদ্র্য বিমোচন করে প্রকল্পের সফলতা ধরে রেখেছে। তিস্তা ব্যারাজ প্রতিষ্ঠার প্রায় তিন দশকেরও অধিক সময় পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে রোদ, বৃষ্টি, ঝড় ও বিবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রতি বছর মেরামত ও সংরক্ষণ কাজে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে ব্যারাজের ৪৪ জলকপাটের রং, রাবার সিল ও অন্যান্য বিবিধ যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ব্যারাজের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় জরুরি ভিত্তিতে মেরামত কাজ সম্পন্ন করার তাগিদে উন্নয়ন রাজস্ব খাতের আওতায় বিগত ২১ সালের ৩০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ‘সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ওই প্রকল্পের আওতায় ব্যারাজের সংস্কার কাজটি অনুমোদন হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনাইটেড ব্রাদার্স লিমিটেড, আলমনগর, রংপুর কর্তৃক শিডিউল মোতাবেক সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ব্যারাজের সংস্কার কাজটি সম্পন্ন হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে কাজটি যথাযথভাবে সম্পাদিত হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জানান, কাজটিতে শুধু ব্যারাজের গেট ও হোয়েস্ট রংয়ের কাজ ধরা থাকলেও ব্যারাজের সৌন্দর্য ও ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধে ব্যারাজের কনক্রিট স্থাপনা, স্টিল রেলিংসহ কন্ট্রোল রুম (বিল্ডিং) যথাযথভাবে রং করা হয়েছে।

ব্যারাজের জন্মলগ্ন থেকে অদ্যাবধি এ ধরনের দৃষ্টিনন্দন কাজ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পে বাস্তবায়িত হয়নি। এ প্যাকেজে স্ক্র্যাপিং, স্যান্ড ব্লাস্টিং, প্রাইমিং কোট, মরিচা ও ক্ষয় প্রতিরোধী এপোক্সি পেইন্টিং, পুরোনো রাবার সিল সরবরাহসহ পরিবর্তন কাজ, গ্রিজিং প্রভৃতি সম্পন্ন করা হয়। যথাসময়ে রং-তুলির কাজ শেষ করায় এখন ব্যারাজ এলাকাকে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনস্থল হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যারাজ এলাকায় পর্যটক উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে এলাকাবাসী পাউবোর সাফল্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রুবাইয়াত ইমতিয়াজ (যান্ত্রিক) বলেন, পাউবোর এ সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্নাম ছড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল প্রযুক্তি আইনে মানহানির মামলাসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ দৌলা জানান, তিস্তা ব্যারাজ একটি জাতীয় স্থাপনা। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক ‘সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যারাজের রঙের কাজটি করা হয়। এখানে অনিয়ম হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।