দেয়ালে সাঁটানো খাদ্য সামগ্রীর ব্যাগ, শৃঙ্খলভাবে নিচ্ছেন দু:স্থরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণ রোধে চলছে সাধারণ ছুটি। প্রায় সবই বন্ধ, কর্মহীন মানুষ। সব বন্ধ আর কাজ না থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছে গরীব ও দু:স্থ মানুষ। করোনার এ দুযোর্গে ‘মানুষ মানুষের জন্য’-এ মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে অসহায়, গরীব ও দু:স্থদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন।

অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, এ দুযোর্গে অনেকেই গরীব, অসহায় আর দু:স্থদের মাঝে দাঁড়ালেও এ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগ অন্যন্য, প্রশংসনীয় আর সুশৃঙ্খল। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনের দেওয়াল। দেয়ালে সাঁটানো রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ভর্তি ব্যাগ। যাতে রয়েছে চাল, ডাল, আলু, লবণ, পেঁয়াজ ও তেল।

সূত্র আরো জানায়, ‘যাদের প্রয়োজন’ মূলত তারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। পুলিশের সহায়তায় সামাজিক দূরত্ব মেনে সবাই দাঁড়িয়ে। এক এক করে যার যতটুকু প্রয়োজন নিয়ে যাচ্ছেন। এক, দুইদিন নয় গত ১৫ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ৫০টি পরিবার পাচ্ছেন এ খাদ্য সহায়তা। আগামী অন্তত দুই মাস এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন সদস্য জানান, এ অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৬৬৩ জন। সংগঠনের পক্ষ থেকে করোনার এ দুযোর্গে এ খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। তবে সদস্যরা কেউ ব্যক্তিগতভাবে এ উদ্যোগের সাথে শরিক হতে পারবেন। সদস্যদের অনেকেই এগিয়ে এসেছে। তবে এর বাইরেও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন জায়গায় অসহায়, দু:স্থদের সহায়তা করে আসছেন।

খাদ্য সামগ্রী নিতে আসা কয়েকজন জানিয়েছেন, এমন অন্যন্য উদ্যোগ প্রশংসনায় পাওয়ার যোগ্য। যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু দেওয়া হচ্ছে। কোন হুড়োহুড়ি নেই। তবে খাদ্য সহায়তা আরো বাড়ানো দরকার। এ সংগঠনের মতো সব সংগঠনকে এ দুযোর্গে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠনটির সভাপতি কর কমিশনার মো. রেজাউল করিম চৌধুরী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এনবিআরের বাহিরের দেয়ালে ব্যাগে শৃঙ্খলভাবে আমরা ব্যাগ সাজিয়ে রাখি। রমনা মডেল থানা আমাদের এ খাদ্য বিতরণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছেন।’

তিনি বলেন, ‘১৫ এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ৫০টি গরীব ও দু:স্থ পরিবারের মাঝে খাবারের ব্যাগ বিতরন করা হচ্ছে। দু:স্থ ও অসহায় মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ২৭ এপ্রিল থেকে ৭০টি পরিবারের মাছে খাবার বিতরন করা হবে। ব্যগে চাল, ডাল, আলু, লবণ, পেয়াজ ও তেল রয়েছে। আগামী দুইমাস এ কার্যক্রম চালু থাকবে। মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করতে সেখানে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

এর আগে দেশে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসে সংগঠনটি। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের এক দিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হয়েছে। ১৫ এপ্রিল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই অনুদানের চেক জমা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুদানের চেকটি গ্রহণ করেন।

চেক প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি কর কমিশনার মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, মহাসচিব যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মাদ ফজলে আহাদ কায়সার ও কোষাধ্যক্ষ অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. কবির উদ্দিন মোল্লা।

মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এক দিনের বেতনের অর্থ দেওয়া ছাড়াও অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে পিপিই বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরী ও নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দুস্থ মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

###