দেশের জন্য ক্ষতিকর ১৭ বিদেশি উদ্ভিদ চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়াম দেশের জন্য ক্ষতিকর ১৭টি বিদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতিকে চিহ্নিত করেছে। যার মধ্যে ৭টি প্রধান। এ কর্মসূচির আওতায় দেশের পাঁচটি রক্ষিত এলাকা- হিমছড়ি, কাপ্তাই ও মধুপুর জাতীয় উদ্যান এবং রেমা-কালেঙ্গা ও সুন্দরবন পূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এর চিহ্নিত ভিনদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোকে সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য ৫টি কৌশলগত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ব্যবস্থাপনা কৌশল জাতীয় বন ও বনজসম্পদ সংরক্ষণে এবং আমাদের টেকসই উন্নয়নে অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গতকাল বুধবার বন অধিদপ্তর আয়োজিত ‘ডেভেলপিং বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড লিস্ট অব প্ল্যান্টস অ্যান্ড ডেভেলপিং ম্যানেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি অব এলিয়েন স্পিসিজ অব প্ল্যান্টস ইন সিলেক্টেড প্রোটেক্টেড এরিয়াস’ শীর্ষক কর্মসূচির চূড়ান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বনমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ও আইইউসিএন-এর সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এ কার্যক্রমের ফলে পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব স্থাপনকারী প্রজাতির বিপণন ও বাণিজ্য প্রতিরোধ, বাস্তুতন্ত্র থেকে এদের নির্মূল এবং বিস্তার রোধের মাধ্যমে এসব ভিনদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তাছাড়া প্রাথমিক শনাক্তকরণ, আমদানিকৃত উদ্ভিদ প্রজাতির জন্য স্ক্রিনিং ও কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতির মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হবে।

মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, কনভেনশন অন বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটির অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ

 অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই দেশের বিভিন্ন রক্ষিত এলাকায় এবং বনাঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা দেশীয় প্রজাতির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার, বাস্তুতন্ত্রের ধারা পরিবর্তন ও খাদ্যশৃঙ্খলকে (ফুড চেইন) ব্যাহত করার ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের ৫১টি রক্ষিত এলাকাসহ ভিনদেশি আগ্রাসী উদ্ভিদ প্রজাতি সম্পূর্ণরূপে চিহ্নিতকরণ এবং এদের সঠিক ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে দেশীয় উদ্ভিদ প্রজাতি এবং বনাঞ্চল সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেনÑপরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের পরিচালক সঞ্জয় কুমার ভৌমিক। আরও বক্তব্য দেন সুফল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায় এবং প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রাকিবুল আমীন।

কর্মশালায় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল হোসেন হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, মধুপুর জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও সুন্দরবন পূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের জন্য প্রণয়নকৃত ৫টি কৌশলগত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার চূড়ান্ত ফল উপস্থাপন করেন। বন বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা এবং এ বিষয়ে দেশের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরাও কর্মশালায় বক্তব্য দেন।