দেশের পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতন

দেশের পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের ধারা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুঁজিবাজারে ব্যাপক পতন দেখা গেছে, যেখানে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে এবং এর প্রভাব বাজারের প্রধান সূচকগুলোতেও পড়েছে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দামে মিশ্র প্রবণতা বিদ্যমান ছিল, তবে পতনের পাল্লাই ছিল ভারী।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদন হয়। এর মধ্যে, বেশ অল্প সংখ্যক কোম্পানি, অর্থাৎ মাত্র ৫২টি শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে দিনশেষে ৩০০টি কোম্পানির শেয়ার দর উল্লেখযোগ্য কমেছে। বাকি ৪৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম দিনের লেনদেন শেষে অপরিবর্তিত অবস্থায় ছিল।

বিভিন্ন ক্যাটেগরির শেয়ারের দিকে তাকালে আরও স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়। ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২০টি কোম্পানির মধ্যে ৩৫টির দাম বেড়েছে, ১৬১টির কমেছে এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। ‘বি’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হওয়া ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৬টির দাম বেড়েছে, যেখানে ৭২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে পেয়েছে এবং পাঁচটি কোম্পানির দাম স্থির ছিল। ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হওয়া ৯৫টি কোম্পানির মধ্যে ১১টির দাম বেড়েছে, ৬৭টির কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।

মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও পতনের চিত্র দেখা যায়। লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র একটির ইউনিট দর বেড়েছে, যেখানে ২৪টির ইউনিট দর কমেছে এবং ১১টির দর অপরিবর্তিত ছিল। করপোরেট বন্ডের ক্ষেত্রে তিনটি ইস্যুর মধ্যে দুটি এবং সরকারি সিকিউরিটিজের দুটি ইস্যুর দাম কমেছে।

এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেনের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৩৮ হাজার ৬২৬টি। এ লেনদেনগুলোর মাধ্যমে মোট ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ১১৪টি শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। টাকার অঙ্কে এ লেনদেনের মোট দাম ছিল ৩৬৭ কোটি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৮৭ টাকা ৪০ পয়সা।

বাজারের এই সামগ্রিক চিত্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচকগুলোতেও প্রতিফলিত হয়েছে। ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) আগের দিনের চেয়ে ৪৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে ৪ হাজার ৯৭২ দশমিক ৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচিত ৩০টি কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচকও ২২ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৪৫ দশমিক শূন্য এক পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ১৬ দশমিক ৫০ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে এক হাজার ১০৪.৭০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

যদি বাজার মূলধনের দিকে তাকাই, তবে দেখা যায় যে, ইক্যুইটির বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৩৬ হাজার ৫২ কোটি ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ৩২২ টাকা ১০ পয়সা। মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার মূলধন ছিল ২৭ হাজার ৮৬ কোটি ২০ লাখ ২১ হাজার ৪১৩ টাকা ১০ পয়সা এবং ডেট সিকিউরিটিজের বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ২৪ হাজার ৬১১ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৫৬ টাকা। সব মিলিয়ে ডিএসইর মোট বাজার মূলধন এদিন ছিল ছয় লাখ ৬৩ হাজার ৪৫০ কোটি ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯০১ টাকা ২০ পয়সা।

অন্যদিকে, ব্লক মার্কেটেও কিছু শেয়ারের লেনদেন দেখা গেছে। এখানে ২৭টি কোম্পানির মোট ৪০টি ট্রেডে ২৮ লাখ ২২ হাজার ৭৫৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যার মোট দাম ছিল নয় কোটি ৭৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ব্লক মার্কেটে বিভিন্ন শেয়ারের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দামের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে।