দেশের মোট জিডিপির আকার দাঁড়াল ৪১১ বিলিয়ন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হিসাব করার ভিত্তি বছর পরিবর্তন করার ফলে দেশের মোট জিডিপির আকারও পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছর ধরে হিসাব করায় ২০২০-২১ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে দেশের মোট জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৪১১ মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের হিসাবে যা ছিল ৩০ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা। ভিত্তি বছর পরিবর্তনের কারণে জিডিপির আকার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সঙ্গে নতুন ভিত্তি বছরের হিসাবে মাথাপিছু আয়ও বেড়ে গেছে। ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছরের ওপর ভর করে ২০২০-২১ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছিল ২ হাজার ২২৭ ডলার। আর ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছরের ভিত্তিতে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক হিসাবে এ তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

মন্ত্রী জানান, নতুন ভিত্তি বছর ধরায় জিডিপির হিসাবে বিভিন্ন পণ্যের জাল বিস্তৃত হয়েছে। ফলে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আগে

২০০৫-০৬ ভিত্তি বছর ধরে হিসাব করা হতো জিডিপি প্রবৃদ্ধির।

বিবিএসের হিসাবে বলা হয়েছে, ২০০৫-০৬ ভিত্তি বছর হিসাবে ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাথমিক হিসাবে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ সময় টাকার অঙ্কে জিডিপি হয়েছে ১২ হাজার ৭২ বিলিয়ন টাকা। নতুন ভিত্তি বছর অনুযায়ী দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে যা ২ লাখ ১৬ হাজার ৫৮৯ টাকা। পুরোনো ভিত্তি বছর (২০০৫-০৬) অনুযায়ী মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৭ ডলার, যা টাকার অঙ্কে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা। ২০১৫-১৬ ভিত্তি বছর ধারায় তিন খাতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে।

কৃষি খাতের বিষয়ে জানানো হয়, জিডিপি নিরূপণের জন্য এর আগে এ খাতের অন্তর্ভুক্ত সব তথ্যের সঙ্গে শস্য উপখাতে প্রায় ২০টি নতুন ফসল যোগ হয়েছে। ড্রাগন ফল, স্ট্রবেরি, ক্যাপসিকাম, লটকন, কচুশাক, শরিফা, মাল্টা ইত্যাদি যোগ হয়েছে। গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগরি মাংসের উৎপাদন তথ্য, বন খাতে নতুন জরিপ তথ্যসহ অন্যান্য হালনাগাদ তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে চলতি মূল্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষি খাতে মূল্য সংযোজনের আকার ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিল্প খাতের জিডিপি নিরূপণে এ খাতের অন্তর্ভুক্ত সব তথ্যের সঙ্গে নতুন উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠান জরিপ (এসএমআই) ও নির্মাণ খাত জরিপের হালনাগাদ তথ্য, বাড়ি থেকে ময়লা বর্জ্য সংগ্রহের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে চলতি মূল্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিল্প খাতে মূল্য সংযোজনের আকার ৩৬ দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সেবা খাতে জিডিপি নিরূপণের জন্য এর আগে এ খাতের অন্তর্ভুক্ত সব তথ্যের সঙ্গে পরিবহন খাতের নতুন জরিপ, উবার, পাঠাও, নতুন বেসরকারি হেলিকপ্টার সংস্থার তথ্য, রিয়েল এস্টেট খাতের নতুন জরিপ, মোবাইল ব্যাংক, এজেন্ট ব্যাংক, সরকারের অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের হালনাগাদ তথ্য নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সার্বিকভাবে চলতি মূল্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেবা খাতে মূল্য সংযোজনের আকার ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।