Print Date & Time : 14 September 2025 Sunday 5:50 pm

দেশে টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কভিড-১৯ টিকা সংগ্রহের পাশাপাশি দেশে উৎপাদনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে বিভিন্ন দেশ ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম মনিরা সুলতানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কভিড-১৯ মহামারি থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশব্যাপী ও অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন কার্যকর করাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতাসহ জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ কভিড মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের জন্য সুরক্ষা সামগ্রীদান, আর্থিক প্রণোদনা, যথাসময়ে টেস্টিং কিট আমদানি এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ল্যাব স্থাপনসহ করোনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করায় ভাইরাসের বিস্তার রোধে দক্ষিণ এশিয়াসহ অনেক উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশ বেশি সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।

তিনি বলেন, কভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের যেসব দেশ টিকাদান কার্যক্রম প্রথম দিকে শুরু করতে সক্ষম হয়, বাংলাদেশ তার অন্যতম। যথাসময়ে টিকা প্রাপ্তির বিষয়ে সরকার শুরু থেকে উদ্যোগ নিয়েছে। টিকা সংগ্রহে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো হলোÑভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সংগৃহীত এবং ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে প্রাপ্ত মোট এক কোটি দুই লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দ্বারা করোনা টিকাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৮ মে পর্যন্ত দেশের চল্লিশোর্ধ্ব ও সম্মুখসারির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে মোট ৯৬ লাখ ৪১ হাজার ৩১২ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভারত থেকে টিকা সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভারতে কভিড পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটায় এপ্রিলে ভারত সরকার টিকা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে বাংলাদেশ সরকার বিকল্প উৎস হিসেবে চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। এরই মধ্যে চীনের সিনোফার্ম থেকে টিকা কেনার বিষয়টি মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা চীন থেকে পাওয়া যাবে। চীন সরকারের কাছ থেকে কভিড-১৯ টিকার পাঁচ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে। এসব টিকাদানের কাজ ২৫ মে শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি থেকে ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য টিকা সংগ্রহের কাজ চলছে। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে ২০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহের জন্য কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি বরাবর পত্র পাঠিয়েছে। ফাইজারের টিকার এক লাখ ৬২০ ডোজ গতকাল দেশে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি কর্তৃপক্ষ। সরকার রাশিয়া থেকে টিকা আমদানির জন্যও এরই মধ্যে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। মহামারি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা সংগ্রহের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দেশ ও টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ চলছে।