নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পন্ন হতে হলে বেসরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতের উন্নয়ন ও তরুণ উদ্যোক্তা বিকাশে আরও গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল রোববার রাজধানীর এক হোটেলে ‘বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে অভিযাত্রা-পরবর্তী নীতি কাঠামো: ব্যবসা-বাণিজ্য প্রেক্ষিত’ বিষয়ে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
জার্মানভিত্তিক ফ্রেডরিখ নুউম্যান ফাউন্ডেশন (এফএনএফ) ও এফবিসিসিআই যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথি ছিলেন। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এসডিজিবিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এফবিসিসিআই সিনিয়র সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্যানেল আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ এবং ডিনেটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. অনন্য
রায়হান অংশ নেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমান সরকার রফতানি আয়, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ইত্যাদি সব সূচকেই সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের বাজেটের আকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে অভিযাত্রার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় তিনটি পর্যায় পূরণ করেছে, যা বেশিরভাগ দেশই পূরণ করতে পারে না। এসব সাফল্যের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের জন্যই এখন রোলমডেল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সুযোগ্য নেতৃত্ব এবং প্রাকৃতিক সম্পদের স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে একটি বড় সমর্থন।
মূল প্রবন্ধে ড. আতিউর রহমান উল্লেখ করেন, গত প্রায় এক দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে ছয় শতাংশের ওপর জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় উল্লেখযোগ্য অঙ্কে উন্নীত হওয়া এবং প্রবাসী আয়ে সাফল্য বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সাফল্যও দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ড. আতিউর তার প্রবন্ধে ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতের উন্নয়ন এবং তরুণ উদ্যোক্তা বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেন।
শফিউল ইসলাম বলেন, একসময়ের সাহায্যনির্ভর অর্থনীতি থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৪২তম অর্থনীতি হিসেবে সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখন বাংলাদেশের সম্ভাবনা এবং অগ্রযাত্রাকে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, এফবিসিসিআই সভাপতি সুষ্ঠু ব্যবসা পরিচালনার জন্য নীতি সহায়তা এবং অন্যান্য সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি দেশের জেলা চেম্বার এবং অ্যাসোসিয়েশনগুলোর উন্নয়নে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বেসরকারি খাতনির্ভর অর্থনীতি যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেবে বলে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
এফএনএফের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. নাজমুল হোসেনও সভায় বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, এফবিসিসিআই এবং এফএনএফ প্রকল্পের আওতায় দেশের শিল্প, বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাত নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সেমিনার ও সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে।
