Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 9:25 am

দেশ বিক্রি করার চুক্তি আমরা করিনি, করব না: নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার জায়গায় নিয়ে গেছেন। বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে, কারণ তারা জানে বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগ করলে এর ফল পাওয়া যাবে। দেশ বিক্রি করার চুক্তি আমরা করিনি, করব না। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে শেখ হাসিনা কিছু করবেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামগ্রিক চিন্তা করেন। চট্টগ্রাম বন্দরের স্বার্থ, দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়, এমন কিছু শেখ হাসিনার সরকার করবে না।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেটসংলগ্ন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সংযোজিত রপ্তানিমুখী পণ্যবাহী কনটেইনার স্ক্যানার স্থাপন ও হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোস্তফা আরিফুর রহমান খান।

নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে এবং আরও বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা টার্মিনাল অপারেশনের জন্য সৌদি আরব বিনিয়োগ করেছে। আরও কয়েকটি দেশ বিনিয়োগের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে। এসব বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও বেশি শক্তিশালী হবে। বন্দরের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইএসপিএস কোড কমপ্লায়েন্স অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার জন্য আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আন্তর্জাতিক মহলে নিরাপদ হিসেবে আখ্যায়িত করার জন্য আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম চট্টগ্রাম বন্দরে স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া মোংলা, পায়রা ও অন্যান্য স্থলবন্দর ডিজিটালাইজেশন করা হচ্ছে। সেখানেও স্ক্যানার বসানো হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের গৃহীত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বহরে যুক্ত হয়েছে রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানার। এটি রপ্তানি পণ্যের জাহাজীকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে, বন্দরের কনটেইনার জট হ্রাস করবে, বৈধ বাণিজ্য সহজতর করবে এবং অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের রপ্তানি নিবৃত্ত করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বন্দর নিরাপত্তা সংস্থা এবং রপ্তানি সহযোগী দেশের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ও কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালনে সহায়তা করবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সংরক্ষিত এলাকার অভ্যন্তরে ৪ নম্বর ও সিপিএআর গেটসংলগ্ন এলাকায় এ স্ক্যানার দুটি স্থাপন করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় দুটি রপ্তানিমুখী গেটে দুটি কন্টেইনার স্ক্যানার, দুই সেট রেডিও অ্যাকটিভ পোর্টাল মনিটর, স্ক্যান্ড ইমেজ মনিটরিং সেন্টার, রিয়েল টাইম সিসিটিভি ও ইমেজ মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে কার্গো রপ্তানির ক্ষেত্রে কার্যকর প্রয়োগ ও স্বেচ্ছা পরিপালনের মাধ্যমে বিদ্যমান কার্গো পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রচলিত ব্যক্তি কর্তৃক হস্তক্ষেপ প্রতিহত করা সম্ভব হবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, বাণিজ্যিক ব্যয় হ্রাস করাসহ সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত মনিটরিং ব্যবস্থা চালু হবে। বন্দরের সার্বিক উন্নয়ন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্ক্যানার দুটি স্থাপনের ব্যয় হয়েছে ৮৬ কোটি টাকা। প্রতিটি স্ক্যানার দিয়ে ঘণ্টায় ১৫০টি কটটেইনার স্ক্যান করা যাবে। এগুলো অপারেশনাল কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এরই মধ্যে চালু করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতের গ্রিন পোর্ট বে টার্মিনালের কার্যক্রম চলমান। এটি চালু হলে ১২ মিটার গভীরতা ও ছয় হাজার কনটেইনার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ অতি সহজে বার্থিং করতে পারবে। ফলে সময় ও আর্থিক সাশ্রয় হবে এবং জাহাজের টার্ন অ্যারাউন্ড টাইমও কমে আসবে।