কভিড-১৯

দৈনিক শনাক্ত দুইশর নিচে নামল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে দৈনিক শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই মাস পর দুইশর নিচে নেমেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১৯৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যাদের বেশিরভাগ ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।

এর আগে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছর ১৮ ডিসেম্বর। সেদিন ১২২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।

দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তার শুরু হলে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। ২৭ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিনশ পেরিয়ে যায়। এরপর জানুয়ারির শেষভাগে তা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

সংক্রমণের সেই ধাক্কা সামলে ফেব্রুয়ারি থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করে, ২৬ ফেব্রুয়ারি তা হাজারের নিচে নেমে আসে।

গত শুক্রবারের চেয়েও গতকাল সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা কমেছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে, মৃত্যু হয় পাঁচজনের।

গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের নিয়ে দেশে কভিড-আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৩ জনে। আরও তিনজনের মৃত্যুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ১০৮ জন। এ সময়ে সেরে উঠেছেন এক হাজার ৮২১ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬৯ জন।

ওমিক্রনের দাপট কমে আসায় দেশে সংক্রমণের হারও কমছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ছিল এক দশমিক ৭৭ শতাংশ, শুক্রবার যা ছিল এক দশমিক ৮৬ শতাংশ।

অথচ গত ২৮ জানুয়ারিতে দৈনিক পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত রোগীর হার পৌঁছেছিল ৩৩ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়। ওমিক্রমণের বিস্তারে সংক্রমণ স্বল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল। গত কয়েক দিনের পরিসংখ্যান বলছে, এখন তা ক্রমেই কমছে।

গতকাল সকাল পর্যন্ত শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর মৃত্যুহার এক দশমিক ৪৯। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১৫০ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৫ শতাংশের বেশি।

যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে তারা সাবই পুরুষ। তাদের একজন ঢাকা, একজন রাজশাহী ও একজন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। মৃতদের দুজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছর ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ নতুন রোগী শনাক্ত হন।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬০ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত রোগী ছাড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৫২ লাখের বেশি।