নিজস্ব প্রতিবেদক; সেতু বিভাগের আওতায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বলেছেন নির্দেশনা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল জাতীয় সংসদে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্ন উত্তর-পর্বে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে সেতুমন্ত্রী এ তথ্য জানান। সোমবারের প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পদ্মা সেতু প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে ভায়াডাক্টসহ ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। মূল সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৫ জুন এই সেতু উদ্বোধন করার সম্মতি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সেতু বিভাগের আওতায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে সম্ভাবতা সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নির্দেশনা পাওয়া গেল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লুৎফুন নেসা খানের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের ক্ষেত্রে এ বছরের ৩০ জানুয়ারি থেকে আবেদনপত্রের সঙ্গে ডোপটেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ডোপটেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এলে বা বিরূপ মন্তব্য থাকলে লাইসেন্স নবায়ন করা হচ্ছে না।
সরকারি দলের বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ পর্যন্ত (মে ২০২২) বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ের পরিমাণ সাত হাজার ১৩৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও মুক্তারপুর সেতুর টোল আদায় ১৮৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
সরকারি দলের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট স্টাডি (ডিএইচইউটিএস) প্রতিবেদন (২০১০) অনুযায়ী ঢাকার দুই সিটির অধিভুক্ত এরিয়ায় ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ রাস্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর চারপাশে বৃত্তাকার ইনার রিং রোড নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
সূচকের পতনেও বেড়েছে লেনদেন
নিজস্ব প্রতিবেদক; সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল সোমবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসইসি) বাজার পতন দিয়ে শেষ হয় লেনদেন। এ নিয়ে পরপর দুই দিন বাজারের মূল্যসূচক কমেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইসির সূচক কমেছে প্রায় ৪৯ পয়েন্ট আর গতকাল কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ দুই দিনে সূচকের পতন ঘটে ৮৮ পয়েন্ট। নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রস্তাবিত বাজেটের পর পুঁজিবাজারে টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। আগের কার্যদিবসের মতো সোমবার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সব মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেটের পর লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে দেখা যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এ প্রবণতা। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৩টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৫২টির বা ৬৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এদিন শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে সাউথইস্ট ব্যাংকের। আগের কার্যদিবস রোববার সাউথইস্ট ব্যাংকের দর ছিল ১৪ টাকা। গতকাল লেনদেন শেষে এর ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ১৪ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬০ পয়সা বা ৪ দশমিক ১০ শতাংশ দর কমেছে। এর মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক ডিএসইর দর পতনের তালিকার শীর্ষে উঠে আসে।
ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে রূপালী ব্যাংকের ৩ দশমিক ৭২ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সের ২ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকসের ২ শতাংশ, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ, বঙ্গজের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সিনোবাংলার ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ, আরডি ফুডের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর কমেছে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৯১ পয়েন্টে দাঁড়ায়। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৮ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সব মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪২ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯০টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।