প্রতিনিধি, রাজশাহী: দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ছাপাখানাগুলো সরগরম থাকার কথা থাকলেও এখনও ব্যস্ততা নেই পোস্টার, হ্যান্ডবিল বা লিফলেট ছাপানোর। নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর বিগত সময়ে যে ধরনের ব্যস্ততা রাজশাহী নগরীর প্রেস পাড়ায় থাকত, এই নির্বাচনে তেমন কোনো ব্যস্ততা নেই এসব জায়গায়। তবে নির্বাচনের কাজ কম থাকলেও ডিসেম্বর মাস হওয়ায় ডায়েরি ও ক্যালেন্ডার ছাপানোর কাজের চাপ রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রেসগুলোয় হাতেগোনা দু-একটা প্রেসকে নির্বাচনের পোস্টার ছাপানোর কাজ করতে দেখা গেছে। ছাপাখানা মালিকরা বলছেন, নির্বাচনের কাজ নেই বললেই চলে। যে কাজগুলো আসছে, তা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম, যদিও তাদের প্রস্তুতি ছিল ভালো। প্রস্তুতিমাফিক তারা কাজ পাচ্ছেন না বলে দাবি করেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও লিফলেটের মাধ্যমে প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে থাকেন। এ কারণে নির্বাচনকে ঘিরে ভিড় লেগে থাকে ছাপাখানায়। তবে এ বছর এখনও সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
ছাপাখানা মালিকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পোস্টার ও লিফলেটের কাজ তেমন একটা আসেনি। নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই শুরু হয় ছাপাখানাগুলোয় নির্বাচনী পোস্টার ও লিফলেট ছাপানোর ব্যস্ততা। রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয় ছাপাখানায়। দু-একজন প্রার্থীর কাজ কেউ কেউ পেয়েছেন। বেশিরভাগ প্রেসই এ ধরনের কাজের কোনো অর্ডারই পায়নি। ফলে গতানুগতিক কাজগুলো করছেন তারা।
নগরীর সাহেববাজার অ্যাকটিভ ডিজিটাল সাইনের প্রোপ্রাইটর ইব্রাহিম হোসেন বাবু বলেন, কাজ নেই বললেই চলে। দুই প্রার্থীর ছোট ব্যানারের কাজ করেছি। সিটি নির্বাচনের চার ভাগের এক ভাগও কাজ নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৫ হাজার ফ্রেম বানিয়েছিলাম। সেখানে মাত্র চার হাজার ফ্রেম বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলো পড়ে আছে। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেড়েছে পিভিসি রোলের দাম। প্রতি রোলে বেড়েছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। বেড়েছে রঙের দামও। প্রতি লিটারে বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। যেহেতু নির্বাচনের ১৫ থেকে ১৬ দিন বাকি, আশা করছি কাজ বাড়তে পারে।
রংধনু অফসেট প্রিন্টিং প্রেসের প্রোপ্রাইটর তাজউল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের কাজের তেমন অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। রাজশাহী-৩ আসনের এক প্রার্থীর হ্যান্ড পোস্টার ছাপানোর কাজ করেছি। আশা করছি আরও দুই থেকে তিন দিন পরে কাজের চাপ বাড়তে পারে।
রাজশাহীতে নির্বাচনের মাইক ভাড়া দেয় ‘বাংলাদেশ মাইক সার্ভিস’। এটি রাজশাহীর মধ্যে পুরোনো সাউন্ড সিস্টেমের দোকান। তারা নির্বাচন আর উৎসব সব অনুষ্ঠানে সাউন্ড সিস্টেমের কাজ পেয়ে থাকে। গত রাজশাহী সিটি করপোরেশেনের নির্বাচনের সময়ের কাজের তুলনায় তারা চার ভাগের এক ভাগ কাজও পায়নি। তাদের দাবি পুরো রাজশাহীর একই চিত্র।
‘বাংলাদেশ মাইক সার্ভিস’-এর প্রোপ্রাইটর ওয়াহিদুর রহমান রুমেল জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত দুই সপ্তাহ আগে থেকে সাউন্ড সিস্টেমের মাইকগুলো প্রস্তুত করা হয়। যেগুলোর ছোটখাটো সমস্যা ছিল, সেগুলো সারিয়ে তোলা হয়েছে। সবমিলে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুতি অনেক ভালো ছিল। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, কিন্তু সেভাবে সাড়া পাচ্ছি না। আশা করছি আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে অর্ডার বাড়তে পারে।