২০০৯ সাল থেকে পেশাভিত্তিক সেবায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউজকুপারস (পিডব্লিউসি) বিশ্বের প্রতিযোগিতাপূর্ণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাজার মূলধন হিসেবে সেরা ১০০টির তালিকা তৈরি করে আসছে। জরিপে স্পষ্টভাবে কিছু নির্দিষ্ট কোম্পানি, রাষ্ট্র ও বিভিন্ন খাতের প্রবণতা এবং উন্নয়ন চিহ্নিত করেছে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। তার ভিত্তিতে শেয়ার বিজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো ধারাবাহিক আয়োজন। আজ ২১তম পর্বে থাকছে মার্কিন বহুজাতিক কোমলপানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দ্য কোকা-কোলা কোম্পানির কথা
রুবেল হাওলাদার: মার্কিন বহুজাতিক কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি। কোম্পানিটি তাদের অন্যতম পণ্য কোকা-কোলার জন্য অধিক পরিচিত। ১৯৮৬ সালে ফার্মাসিস্ট জন স্টিথ পেম্বার্টন এ পণ্যটি উদ্ভাবন করেন।
১৩০ বছর আগে ১৮৮৬ সালে আসা গ্রিগস ক্যান্ডলার কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে এর ২০০টিরও বেশি দেশে ৫০০টিরও অধিক ব্র্যান্ড রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১৭০ কোটি মানুষকে কোকা-কোলা এসব ব্র্যান্ড পরিবেশন করে থাকে। কোম্পানি ১৮৮৯ সাল থেকে এক ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক বিপণন ব্যবস্থা চালু রেখেছে, যেখানে কোম্পানিটি শুধু সিরাপজাতীয় পণ্য প্রস্তুত করে। বিশ্বব্যাপী এ সিরাপ বিপণন করা হয়। উত্তর আমেরিকায় দ্য কোকা-কোলা কোম্পানির নিজস্ব বিপণন কোম্পানি রয়েছে, যার নাম কোকা-কোলা রিফ্রেশমেন্ট।
দ্য কোকা-কোলা কোম্পানির অধিগ্রহণের রয়েছে লম্বা ইতিহাস। ১৯৬০ সালে তারা অধিগ্রহণ করে মিনিট মেইড, ১৯৯৩ সালে ভারতীয় কোলা কোম্পানি থামস আপ ও ১৯৯৫ সালে অধিগ্রহণ করে ব্রাক’স। ২০০১ সালে ফলের জুসের কোম্পানি ওডওয়ালাকে ১৮১ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে অধিগ্রহণ করে কোকা-কোলা। ২০০৭ সালে ফিউজ বেভারেজকে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে তারা অধিগ্রহণ করে। ১৯৮২ সালে দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি ৬৯৩ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে কলাম্বিয়া পিকচার্সকে কিনে নেয়। এটি ছিল তাদের প্রথম নন-বেভারেজ অধিগ্রহণ। অবশ্য ১৯৮৯ সালে সনির কাছে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে চলচ্চিত্র স্টুডিওটি বিক্রি করে কোম্পানিটি।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া প্রদেশের আটলান্টায় ওয়ান কোকা-কোলা প্লাজায় এর সদর দফতর। বর্তমানে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুহতার কেন্ট। আর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জেমস কুইছে। প্রতিষ্ঠানটিতে এক লাখ ২৩ হাজার ২০০ কর্মী কাজ করছেন।
পিডব্লিউসির গবেষণায় ২০০৯ সালে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ১০২ বিলিয়ন ডলার। ওই বাজার মূলধনে শীর্ষ ১০০ কোম্পানির মধ্যে এর অবস্থান ছিল ২৬তম। সর্বশেষ গত বছরের প্রতিবেদনে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়ে ২০১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আর শীর্ষ ১০০ কোম্পানির তালিকায় পাঁচ ধাপ এগিয়ে ২১তম অবস্থানে রয়েছে।
২০১৬ সালের হিসাবে কোম্পানিটির আয় ৪১ দশমিক ৮৬৩ বিলিয়ন ডলার। পরিচালন আয় ছিল আট দশমিক ৬২৬ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া নিট আয় ছিল ছয় দশমিক ৫২৭ বিলিয়ন ডলার। কোম্পানিটির মোট সম্পদ ৮৭ দশমিক ২৭০ বিলিয়ন ডলার। মোট ইকুইটি ২৩ দশমিক শূন্য ৬২ বিলিয়ন ডলার।