Print Date & Time : 7 August 2025 Thursday 4:28 am

দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে সংক্রমণ কমে ‘সুবিধাজনক পরিস্থিতি’ হলে ও টিকা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বুধবার সরকারের নানা দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সরকারপ্রধান এ নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সচিব সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, তাড়াতাড়ি একটা কমফোর্টেবল সিনারিও এলে স্কুল-কলেজ খুলে দেবে, সেটা তারা প্ল্যান প্রোগ্রাম করেছেন। পাশাপাশি আমাদের সরকারি স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইন বা ডিজিটাল সিস্টেমেও চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম ডিজিটালি চলছে, গ্র্যাজুয়েশনও হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশনা দিয়েছেন, শিক্ষা কার্যক্রম ভার্চুয়ালি হোক বা অনলাইনে হোকÑচলুক। পাশাপাশি একটা কমফোর্টেবল সিনারিওতে এলেই যেন খুলে দেয়া হয়।’

সভায় শিক্ষা সচিব তাদের পরিকল্পনার কথা অবহিত করেছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘শিক্ষা সচিবও বলেছেন, তারা একটা প্ল্যান প্রোগ্রাম করছেন। গতকাল তারা একটা বৈঠকও করেছেন আইসিটির সঙ্গে। দ্রুতই তারা পাবলিকলি বিষয়টি জানাবেন। যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেয়া যাতে যায়। ছাত্রদের মধ্যে ১৮ বছরের বেশি বয়সী যারা আছেন, তাদের কুইকলি যাতে ভ্যাকসিনেটেড করা হয়।’

দেশে কভিডের প্রকোপ শুরু হলে গত বছর ১৭ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর কয়েক দফা চেষ্টা করেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি, বরং দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও জেএসসির ফলের গড় করে মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতেই তাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হচ্ছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও আগের রোলে পরের ক্লাসে তুলে দেয়া হয়।

দেড় বছর ধরে ঘরে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা হলেও তাতে শিক্ষা কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের। এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া দরকার এবং খুব দ্রুত সেটার ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় বলে না, আমাদের স্কুলগুলোও খোলা দরকার। এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাচ্চারা ঘরে থাকতে থাকতে তাদেরও যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে। আর সেদিকে আমাদের আরও নজর দেয়া দরকার।’

পরে বিকালে সভার আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে এসে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘‘সরকার এখন ‘যত দ্রুত সম্ভব’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা করছে। খুব দ্রুতই তো আমরা ছয় কোটি ভ্যাকসিন পেয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন গ্রুপ করে করে ছাত্রদের মধ্যে যারা বয়স সীমার মধ্যে (১৮ বছর বা তার বেশি) আসবে, তাদের প্রিভিলেজ দিয়ে ভ্যাকসিন দেব।’’

সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি প্রিসাইজলি কোনো তারিখের কথা বলছি না, তারিখেরে কথা আমরা জিজ্ঞাসাও করিনি।’

দুটি বিষয় প্রধানমন্ত্রী বিবেচনার নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এক, জেনারেল সিনারিও যদি কমফোর্টেবল অবস্থায় চলে আসে, ভাইরাসটা যদি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং দুই নম্বর হলো ভ্যাকসিনেশন। দুটি জিনিস বিবেচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। সব সচিব এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, ছেলেমেয়েরা বাসায় বসে থাকতে থাকতে অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে আছে। সুতরাং তাদের তো বাইরে নিয়ে আসা দরকার।’