Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 11:18 pm

‘ধরে-বেঁধে’ কাউকে নির্বাচনে আনব না: সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ তারা চাইলেও কাউকে বাধ্য করার সুযোগ তাদের নেই। গতকাল সোমবার জাতীয় পার্টি (জেপি) ও ন্যাপের সঙ্গে সংলাপ শেষে নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ইসির প্রতি বিভিন্ন মহল তাগিদ দিয়ে এলেও সিইসি আগেও একই কথা বলেছিলেন।

তিনি গতকাল বলেন, ‘আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক চাই, ঢিমেতালে নয়।…আমরা কাউকে ধরে-বেঁধে নির্বাচনে আনব না।’ সক্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হলে ভারসাম্য সৃষ্টি হয় বলে মন্তব্য করেন হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘সবার প্রতি আন্তরিকভাবে উদাত্ত আহ্বান থাকবেÑআপনারা আসেন, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখেন ও সহায়তা করেন।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ইসির আস্থা অর্জনের ওপর জোর দিচ্ছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তবে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল এই ইসির অধীনে সংলাপেও যায়নি।

এক প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বিএনপি যদি অংশগ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচনটা অধিক অংশগ্রহণমূলক হবে। এখন বিএনপির যে রাজনৈতিক কৌশল, আমরা কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের কৌশলের ওপর হস্তক্ষেপ করব না, করতে পারি না, সে এখতিয়ার আমাদের নেই। এখন বিএনপি যেটা চাচ্ছে, সে ব্যাপারে আমাদের কোনো রকম বাধা নেই। কিন্তু আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত রয়েছে, সে দায়িত্বের পথে আমরা এগিয়ে যাব।’ বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে সিইসি বলে আসছেন, সরকার কেমন হবে, তা বলার এখতিয়ার ইসির নেই।

ইভিএম নিয়ে ইসির সংলাপে বিএনপিসহ ১১ দল বর্জন করার পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে উš§ুক্ত আলোচ্যসূচি নিয়ে জুলাই মাসে আবার সংলাপ ডাকে ইসি। বিএনপিসহ সাতটি দল এই সংলাপও বর্জন করে। দুটি দল সংলাপে না এসে মতামত জানিয়ে দেয়। সেসময় সংলাপে অংশ নিতে না পারায় সোমবার ইসির সঙ্গে বসে জাতীয় পার্টি (জেপি) ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ বাকি দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে সব মিলিয়ে তিন শতাধিক প্রস্তাব আসে ইসির কাছে।

হাবিবুল আউয়াল গতকাল বলেন, ‘সংলাপের সুপারিশ শুধু দলকে নয়, সরকারকেও জানানো হয়েছে। কারণ দলগুলো কী বলছে, তা সরকারেরও জানা উচিত। সরকার কিন্তু কোনো দলের নয়। সেই বিভাজনটাকে মাথায় রেখে আমরা সরকারকে জানিয়েছি।’

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে রোডম্যাপ চূড়ান্তভাবে জানানো সম্ভব হবে।’

সংলাপ শেষে ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত কার্যকরী সভাপতি আইভি আহমেদ বলেন, ‘ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা হলে আমরা গ্রহণ করব। এটার জন্য মানুষ এখনও প্রস্তুত নয়। প্রস্তুত কতটুকু করতে পারবেন, তা তাদের ওপর নির্ভর করবে। গ্রহণযোগ্যতা আনতে পারলে ইভিএম চাই, না হলে চাই না। যদি বুঝতে পারি ত্রুটিমুক্ত, তাহলে অবশ্যই আমরা চাইব।’

নির্বাচনে কোথাও ইভিএম, কোথাও ব্যালট করা হলে তাতে ‘বৈষম্য’ দেখছে জাতীয় পার্টি (জেপি)। দলটির সুপারিশ হচ্ছে, হয় ৩০০ আসনেই ইভিএম রাখতে হবে, নয়তো প্রতিটি আসনের কিছু কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে কেবল রাজনৈতিক দলের নয়, জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।’