প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁর বরেন্দ্র অধ্যুষিত তিন উপজেলায় সাবমারসিবল পাম্পের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে নলকূপে পানি উঠছে না। কাজেই দূর থেকে পুকুরের পানি এনে সংসারের যাবতীয় কাজ করতে তাদের খুবই কষ্ট হতো। তাই এ তিন উপজেলায় ৩০০ গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এসব পাম্প থেকে ১৫ হাজার পরিবারের প্রায় ৭৫ হাজার মানুষের মধ্যে সুপেয় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
এ কার্যক্রমে একটি পাড়ায় একটি সাবমারসিবল পাম্প বসিয়ে উঁচুতে একটি পিলারের ওপর তিন হাজার লিটারের ট্যাংকি স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুতের সাহায্যে সাবমারসিবল চালিয়ে ট্যাংকিতে একটি পাইপের দ্বারা পানি উত্তোলন করা হয়। অন্য পাইপের সঙ্গে সংযোগ করে পাড়ায় পাড়ায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয়েছে। একটি ট্যাংকি থেকে সংশ্লিষ্ট পাড়ায় পৃথক আটটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এসব প্ল্যাটফর্মে ট্যাপ সংযোগ করে পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ প্ল্যাটফর্মে এলাকাবাসী যার যার প্রয়োজন মতো পানি সংগ্রহ করতে পারেন।
নওগাঁ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-নওগাঁ-চাঁপাইনবাবগঞ্জের নি¤œ পানির স্তর অধ্যুষিত এলাকায় কমিউনিটিভিত্তিক পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এ ৩০০ পাম্প স্থাপন করতে মোট খরচ হয়েছে ৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে এ তিন উপজেলা ছাড়াও পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলায় একই ধরনের পাম্প স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
সাপাহারের ওড়নপুর গ্রামের মোজাম্মেল হক, আবদুর রশিদ, এন্তাজুর রহমান, শিউলি বেগম ও মর্জিনা খাতুন জানিয়েছেন, তারা বংশপরম্পরায় কুয়া ও পুকুরের পানি পানসহ রান্নার কাজে ব্যবহার করে আসছেন। বর্তমানে সাবমারসিবল পাম্পের মাধ্যমে পাড়ায় পাড়ায় পানি সরবরাহের ফলে একদিকে যেমন পানির সংকট নিরসন হয়েছে অন্যদিকে তারা অসুখ-বিসুখের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন।
এ পানি ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য জনপ্রতি মাত্র ১০ টাকা করে মাসিক বিল নেওয়া হয়ে থাকে। আদায়কৃত অর্থ থেকে সংশ্লিষ্ট মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের পর যে অর্থ অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
রাজশাহী-নওগাঁ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাধীন নি¤œ পানির স্তর অধ্যুষিত এলাকায় কমিউনিটিভিত্তিক পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে এ ৩০০ পাম্প স্থাপন করতে মোট খরচ হয়েছে ৯ কোটি ২২ লাখ টাকা।
নওগাঁ জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, এ তিন উপজেলা ছাড়াও দ্বিতীয় পর্যায়ে পতœীতলা ও ধামইরহাট উপজেলায় একই ধরনের পাম্প স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।