নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা ও দর্শনায় অভিযান চালিয়ে দুই ব্যক্তিকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে; যারা রীতিমতো কারখানা বানিয়ে গ্যাস্ট্রিক, ঠাণ্ডাজনিত রোগের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ তৈরি করে সারাদেশে সেসব বিক্রি করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন আহমেদ দর্শনার ‘ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস’ নামের একটি ভুয়া ওষুধ কারখানার মালিক। আর মো. আলী আক্কাস শেখ পাইকারি ওষুধ বিক্রেতা। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ এবং ওষুধ তৈরির সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গিয়াস উদ্দিন এ কারবারের পেছনে ‘মূল ব্যক্তি’। ঢাকার আরামবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আক্কাসকে গ্রেপ্তার করা হয় পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে। তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০টি নকল পেনটোনিক্স ২০ ট্যাবলেট, ১৮ হাজার নকল মোনাস ১০ ট্যাবলেট, ওষুধ তৈরির ডায়াস ও ৩৪ কেজি ফয়েল পেপার জব্দ করা হয়।
হাফিজ আক্তার বলেন, এর মধ্যে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮০টি পেনটোনিক্স ট্যাবলেট এবং ১৮ হাজার মোনাস ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় চকবাজারের মদিনা চাঁন সরদার কোল্ডস্টোরেজ এবং এজেআর ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি (কুরিয়ার সার্ভিস) থেকে। এসব ওষুধের গায়ে ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং এক্মি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড লেখা থাকলেও সেগুলো আসল নয়। বিক্রেতা মো. আলী আক্কাস শেখকে এসব ওষুধের কাগজপত্র দেখাতে বললে তিনি বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।”
আলী আক্কাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই নকল ওষুধ কারখানার মূল মালিক গিয়াস উদ্দিনের কথা জানতে পারে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আক্কাসকে সঙ্গে নিয়ে আরামবাগে অভিযান চালিয়ে গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাফিজ আক্তার বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় একটি বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস নামে আয়ুর্বেদিক ব্যবসার আড়ালে এসব নকল ট্যাবলেটসহ আরও অন্যান্য ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করে আসছিলেন। তার মূল ডিলার মো. আলী আক্কাস শেখ সিন্ডিকেটের অন্য সদস্যদের সহযোগিতায় এসব নকল ওষুধ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করতেন।
ডিবির সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের’ এসব ওষুধে কার্যকর উপাদান নেই। এসব ব্যবহারে মানুষের লিভার, হƒদযন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র এবং কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।