নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের নভেম্বর মাসে দেশে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। নভেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। একই সঙ্গে নভেম্বরে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। এছাড়া খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল সাড়ে আট শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ দপ্তরে গতকাল এসব তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি হ্রাস হওয়ার দিক দিয়ে হ্যাটট্রিক হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের দেশে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। আমাদের ধান ও সবজি উৎপাদন ভালো হয়েছে। ফলে আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে।’

কোন কোন পণ্যের দামের ভিত্তিতে এ মূল্যস্ফীতি প্রাক্কলন করা হয়েছেÑএমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ৪২২টি পণ্যের ওপর ভিত্তি করে মূল্যস্ফীতি যাচাই করা হয়। এখন সেগুলো আবার ফের বিবেচনা করা হবে। কেননা এখানে সোনার দামও ধরা হয়েছে। সোনার দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ে। এছাড়া মাখন ও কফিসহ এরকম অনেক পণ্যের দাম ও ধরা হয়। এগুলো সংশোধন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের আশা পূরণ হয়নি। মূল্যস্ফীতি কমার মূল কারণ হচ্ছে ব্যবস্থাপনা। এক্ষেত্রে কোনো কোনো পণ্যের কর ছাড় এবং টিসিবিরি পণ্যে বিক্রির কারণে মূল্যস্ফীতি কমেছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মধ্যবিত্তের বিষয়ে আলাদা কোনো কর্মসূচি নেই সরকারের। অর্থনৈতিক, মানবিক ও রাজনৈতিক কারণে নিন্মবিত্তের দিকে নজর দেয়া হচ্ছে।’

গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ০৭ শতাংশ।

এদিকে, নভেম্বরে মজুরি হার শতকরা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। কৃষি খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। শিল্প খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

গত জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। গত জুলাইয়ে মজুরি হার ছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, আগস্টে ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।