শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী: নরসিংদী জেলায় চলতি মৌসুমে ৫৫ হাজার ৩১১ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রায় তিন হাজার ৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি হয়েছে। জেলার রবি মৌসুমে বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যা ও জমি প্রস্তুত শেষে এখন ধান বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বেশকিছু এলাকায় বোরো লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের বপনের কাজ শেষে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হতে পারে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।
জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় উচ্চ ফলন শীল (উফসী) জাতের ৪৮ হাজার ৯১৪ হেক্টর, হাইব্রিড জাতের ছয় হাজার হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৩৯৭ হেক্টর ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোরো আবাদ করতে দুই হাজার ৭১৩ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে সে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে এ বছর বীজতলা তৈরি হয়েছে তিন হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে।
বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শোভন কুমার ধর। জেলায় বোরো চাষ সফল করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ইউরিয়া ১৬ হাজার ৩৬৫ মেট্রিক টন, টিএসপি ছয় হাজার ২০১ মেট্রিক টন, এমওপি ছয় হাজার ৯৬১ মেট্রিক টন, জিপসাম চার হাজার পাঁচ মেট্রিক টন, জিংক সার ৪৬৪ মেট্রিক টন, ডিএপি ছয় হাজার ৬১৫ মেট্রিক টন।
রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বনি আমিন খান বলেন, ‘রায়পুরায় এক হাজার ৮৬০ জন কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড বীজ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া ৫০ একর জমিতে ট্রেতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। আমরা এ বছর বোরো চাষে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার আশা করছি।’
নরসিংদীতে এ বছর বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন। তিনি জানান, বোরো আবাদ সফল করতে শুকনো বীজতলা ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নরসিংদীতে ২৫ হেক্টর জমিতে শুকনো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শোভন কুমার ধর বলেন, ‘আমরা কৃষকদের হাইব্রিড এবং উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো ধান চাষের জন্য উৎসাহিত করছি। উচচফলনশীল জাতের ব্রী ধান ৫০, ৬৩, ৬৪, ৮৯, ৯২ জাতগুলো যাতে কৃষকদের নাগালে দিতে পারি, সে ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি ব্রী ধান ২৮ চাষ করার পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল জাতে বোরো ধান চাষের জন্য উৎসাহিত করছি। কারণ গত এক থেকে দেড় বছর ধরে ব্রী ধান ২৮ ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বোরো চাষে অধিক ফলন লাভের জন্য আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করছি। বোরো চাষ সফল করতে নরসিংদী জেলায় সারের কোনো সংকট নেই, পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে।