নরসিংদীর ছয় নদী খননের কাজ ৭৫ ভাগ সম্পন্ন

প্রতিনিধি, নরসিংদী: নরসিংদীতে নদীর প্রবাহ তৈরি করতে ছয়টি নদ-নদীর ২৩২ কিলোমিটার খনন কাজের প্রায় ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ আগামী ১১ মাসের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মনিটরিংয়ে সেনাবাহিনীর ২৪ কনস্ট্রাকশন খনন কাজের বাস্তবায়ন করছে। নদনদীগুলো হলো আড়িয়াল খাঁ, হাড়িধোয়া, ব্রহ্মপুত্র, পাহাড়িয়া, মেঘনা ও পুরোনো ব্রহ্মপুত্র।

নরসিংদী অংশের এই ছয়টি নদনদীর ভরাট হয়ে যাওয়া ৩২৩১ দশমিক আট কিলোমিটার অংশ খনন করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। একই বছর ১২ ডিসেম্বর এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ কার্যাদেশ প্রাপ্ত হয় এবং ২৮ এপ্রিল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৎকালীন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী (বর্তমানে নরসিংদী সদরের সংসদ সদস্য) লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (বীর প্রতীক)।

একই বছর ১৫ মে প্রকল্প এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়। আরডিপিপির চুক্তি অনুযায়ী আগামী বছর জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। ওই নদনদীগুলোর খনন কাজ সমাপ্তের লক্ষ্যে ১০৩ দশমিক ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ ভৌত কাজের  প্রায় ৭৬ দশমিক পাঁচ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া আর্থিক অগ্রগতি হিসেবে ৪৩ দশমিক ০৫ ভাগ ব্যবহƒত হয়েছে। আরডিপিপির চুক্তিকৃত ১০৩ দশমিক ৪১ কোটি টাকার মধ্যে ২৩১ দশমিক আট কিলোমিটার নদী খনন, ২২ দশমিক ৮০৪ কিলোমিটার ঢেউয়ের আঘাত থেকে নদীতীর রক্ষা কাজ, পাঁচ দশমিক ২৫৫ কিলোমিটার তীর প্রতিরক্ষামূলক কাজ এবং ১৬টি ব্রিজ শক্তিশালী করার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

এসব নদনদী খননকাজের অগ্রগতির বিষয়ে বৃহস্পতিবার ডিসির সম্মেলন কক্ষে এক অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় ডিসি আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান সভাপতিত্ব করেন। এ সময় প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা করেন প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তানভীর আহমেদ।

এ সময় বক্তব্য দেন প্রকল্পের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) রফিক উল্লাহ, মেজর ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত ডিসি ফারুক আহমেদ, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী মোরশেদ, নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাখন দাস, সেক্রেটারি মাজহারুল পারভেজ, করিমপুর ও আলোকবালী ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক প্যানেল মেয়র রিপন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যরা।

সভায় সবার অবগতির জন্য জানানো হয়, একাধিক প্যাকেজে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেনাবাহিনী কাজ বাস্তবায়ন করছে।

সভায় আরও জানানো হয়, এ প্রকল্পের মাধবদী ও সেখেরচর এলাকায় চার কিলোমিটার অবৈধভাবে দখল করা অংশের এক কিলোমিটার উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ২৫৭টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে, যার বেশিরভাগ উচ্ছেদ করা হয়েছে।