প্রীতি রঞ্জন সাহা, নরসিংদী: আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন উয়ারী বটেশ্বর ও সবুজে ঘেরা নরসিংদীর একমাত্র চিত্তবিনোদন কেন্দ্র হচ্ছে ড্রিম হলিডে পার্ক। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক-লাগোয়া সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকার চৈতাবতে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন এই বিনোদন পার্কটি নজর কেড়েছে দর্শকদের।
প্রায় ৬০ একর জমির ওপর নির্মিত পার্কটিতে বিভিন্ন ধরনের ওয়াটার বাম্পার কার, রাইডার ট্রেন, বাইসাইকেল, রকিং বর্স, স্পিডবোট, সোয়ানবোট, জেড ফাইটার, নাগেট ক্যাসেল ও এয়ার বাইসাইকেল রয়েছে। এখানে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ ও কৃত্রিম পর্বত তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া এ পার্কে ওয়াটার পুল স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে কান পেতে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়।
ড্রিম হলিডে পার্কে আসা দর্শনাথীদের কথা ভেবে এখানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে চাইনিজ, বাংলা খাবারসহ চটপটি, ফুচকা ও আইসক্রিম পাওয়া যায়। এছাড়া ড্রিম হলিডে পার্কে আছে নজরকারা জামদানির সংগ্রহ এবং বেড শিট, থ্রিপিস ও অন্যান্য জিনিসপত্র। দর্শনার্থীদের বসার জন্য এই পার্কে অনেক খুপরিঘর রয়েছে, আর বিনোদনের কথা ভেবে সংগীতের নানা ধরনের উপকরণ রাখা হয়েছে। যে কেউ পরিবার নিয়ে নিশ্চিন্তে ড্রিম হলিডে পার্কে ভ্রমণ করতে পারবেন। পার্কটি প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। পার্কের ভেতরে প্রবেশ করতে ৩০০ টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে হবে। চাইলে পিকনিকের স্পট হিসেবে ড্রিম হলিডে পার্কটি বেছে নিতে পারেন। এখানে মায়াবী ও মধুরিমা নামে দুটি পিকনিক স্পট রয়েছে। এছাড়া দুটি এসি রুমের একটি বাংলো পিকনিকের জন্য বরাদ্দ থাকে। পরিবার নিয়ে এখানে রাতযাপন করতে চাইলে পার্কের নিজস্ব বিলাসবহুল কটেজ থেকে পছন্দের কটেজ বেছে নিতে পারবেন।
কীভাবে যাবেন বাসে ড্রিম হলিডে পার্ক: ঢাকার মহাখালী, সায়েদাবাদ, কমলাপুর ও গুলিস্তান থেকে বিভিন্ন বাস সার্ভিস নরসিংদী যাওয়া-আসা করে। বনানী থেকে পিপিএল সুপার ও গুলিস্তান থেকে মেঘালয় লাক্সারি বাসে ড্রিম হলিডে পার্কের প্রধান ফটকের সামনে নামতে ৯০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়া লাগে।
ট্রেনে যাওয়ার উপায়: কমলাপুর অথবা বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে আন্তঃনগর এগারোসিন্দুর কিংবা মহানগর ট্রেনে করে নরসিংদী যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী যেকোনো লোকাল ট্রেনে করেও নরসিংদী আসা যায়। নরসিংদী রেলস্টেশন থেকে বাস কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে ড্রিম হলিডে পার্কে যেতে হবে। আর লোকাল ট্রেনে ভ্রমণ করলে নরসিংদী স্টেশন ছাড়াও ঘোড়াশাল স্টেশনে নেমে সেখান থেকে বাসে করে পার্কে চলে যেতে পারেন। এছাড়া ঢাকা টু সিলেট মহাসড়কে কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও সিলেটের যেকোনো বাসে সরাসরি পার্কের সামনে নামতে পারবেন। কাঁচপুর অথবা টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ ও ঘোড়াশাল হয়ে নরসিংদী যেতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।
টিকিটের মূল্য: প্রাপ্তবয়স্কদের জনপ্রতি ৩০০ টাকা ও শিশুদের জন্যে ২০০ টাকা, সঙ্গে থাকবে সাফারি পার্কের প্রবেশ অধিকার। ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৩০০ টাকা। অনেক ধরনের রাইড আছে, একেক রাইড ফি একেক রকম। বিভিন্ন রাইড চড়তে জনপ্রতি ৫০ থেকে ৪০০ টাকা লাগবে। কাপল ও ফ্যামিলি প্যাকেজ: এছাড়া ২০ রকমের রাইড নিয়ে (ওয়াটার পার্ক ও সাফারি পার্কসহ) আছে কাপল ও ফ্যামিলি প্যাকেজ। ভ্যাটসহ কাপল প্যাকেজের মূল্য দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং চারজনের জন্য ফ্যামিলি প্যাকেজের মূল্য চার হাজার ৫০০ টাকা।
পিকনিক প্যাকেজ: ড্রিম হলিডে পার্কে ১০০ থেকে এক হাজার জনের পিকনিক স্পট ভাড়া নেয়া যাবে। বিভিন্ন সুবিধার ওপর নির্ভর করে পিকনিক স্পটের ভাড়া ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা।