শেয়ার বিজ ডেস্ক: নাইজেরিয়ার সাবেক এক গভর্নরের পাচার করা বিপুল পরিমাণ অর্থের একটি অংশ ফিরিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। আফ্রিকার দেশটির ডেল্টা রাজ্যের সাবেক গভর্নর জেমস আইবরি ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যে মুদ্রাপাচারের দায়ে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তিনি তেলসমৃদ্ধ রাজ্যটি থেকে আনুমানিক ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার চুরি করেছিলেন বলে ভাষ্য কৌঁসুলিদের। এসব অর্থের মধ্যে উদ্ধার করা প্রায় ৫৮ লাখ ডলার নাইজেরিয়াকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। খবর: বিবিসি।
আইবরির যেসব সম্পদ জব্দ করার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে একটি বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার জেট বিমানও ছিল। উদ্ধার করা ৫৮ লাখ ডলার আইবরির স্ত্রী, বোন এবং এই সাবেক গভর্নরের এক এজেন্টের কাছে পাওয়া গেছে। আইবরির পাশাপাশি এ তিনজনও মুদ্রাপাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। পাচার করা আরও অর্থও উদ্ধার করা যাবে বলে আশা করছেন তদন্তকারীরা।
নাইজেরিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবাকার মালামি পাচার করা অর্থ যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে পাওয়াকে ‘নাইজেরিয়ার অর্জন করা মর্যাদার স্বীকৃতির প্রদর্শনী’ বলে বর্ণনা করেছেন। আইবরি আশির দশকে যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে লন্ডনের একটি দোকানে ক্যাশিয়ারের কাজ নেন। ১৯৯১ সালে আইবরি ওই দোকান থেকে চুরি করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। পরে তিনি নাইজেরিয়ায় ফিরে গিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৯৯ সালে তিনি ডেল্টার গভর্নর হন এবং এর পর থেকেই তিনি রাজ্যের কোষাগার থেকে অর্থ সরাতে শুরু করেন। ২০০৫ সালে লন্ডনে আইবরি তার এজেন্টের মাধ্যমে একটি ব্যক্তিগত জেট বিমান কেনার চেষ্টা করলে ব্রিটিশ পুলিশ ফের তার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে। নাইজেরিয়ায় তার একদল সমর্থক পুলিশের ওপর হামলা চালালে সে যাত্রায় তিনি ধরা পড়ার হাত থেকে বেঁচে যান। পরে ২০১০ সালে দুবাইয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়।
প্রায় পাঁচ কোটি পাউন্ড জালিয়াতির অভিযোগে ২০১২ সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়ার পর যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ তাকে অভিবাসন আটক কেন্দ্রে রাখে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ইমেইলে আইবরিকে অভিবাসন আটক কেন্দ্রে রেখে কী করে তার কাছ থেকে অন্তত পাঁচ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ড উদ্ধার করা যায়, তা নিয়ে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল, যা পরে আদালতের রায় থেকে জানা গেছে।
২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের কৌঁসুলিরা আদালতের এক বিচারকের কাছে আইবরির ১১ কোটি ৭৭ লাখ পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দেয়ার আবেদন করেন। এসব সম্পদের মধ্যে আইবরির বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব ছাড়াও লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট, নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় ৫০ লাখ পাউন্ড মূল্যের প্রাসাদোপম বাড়িসহ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ১০টিরও বেশি স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে আদালতের নথিতে দেখা গেছে।
যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ আইবরির লুট করা টাকা নাইজেরিয়ায় ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে চলতি বছরের মার্চে ঘোষণা দেয়। কিন্তু ওই টাকা কীভাবে খরচ হবে, তা নিয়ে য্ক্তুরাজ্যের সঙ্গে হওয়া চুক্তি আফ্রিকার দেশটিতে ব্যাপক সমালোচনার জš§ দেয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী নাইজেরিয়ার সরকার একটি সেতু ও দুটি সড়ক বানাতে ওই টাকা খরচ করতে পারবে