Print Date & Time : 8 July 2025 Tuesday 8:42 am

নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে ব্যবসা করছে ঢাকা ডায়িং

নিজস্ব প্রতিনিধি: নানা রকম অনিয়মের মধ্য দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি ঢাকা ডায়িং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং। কোম্পানিটির সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন মূল্যায়নের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে,  নেটওয়ার্কিং ক্যাপিটাল নেগেটিভের পাশাপাশি সমাপ্ত হিসাব বছরে ঋণ ও সুদ পরিশোধ করেনি ঢাকা ডায়িং। কোম্পানিটির গ্যাস বিতরণ কোম্পানি থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এর ফলে বর্তমানে কোম্পানিটির ডায়িং বিভাগ কাজ করছে না। কিন্তু ওয়েভিং ও স্টিচিং বিভাগ চালু রয়েছে।

ঢাকা ডাইংয়ের স্টক থেকে পণ্য বিক্রি বেশিরভাগই সমাপ্ত হয়েছে। কিন্তু কোম্পানিটি এখনও চালু রয়েছে এ ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

জানা গেছে, কোম্পানিটি শ্রমিকদের প্রফিট ও ওয়েলফেয়ার ফান্ডের তিন কোটি ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৬৩ টাকা দীর্ঘদিন থেকে বিতরণ করেনি। এর ফলে কোম্পানিটি শ্রম আইন-২০০৬ লঙ্ঘন করেছে।

কোম্পানিটি স্থায়ী সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন পাঁচ বছর আগে করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ অ্যাকাউন্ট স্ট্যান্ডার্ডস অনুযায়ী সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন সঠিক সময়ে করতে হবে। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের মতে, কোম্পানিটির পুনরায় সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানি। অনুমোদিত ৩০০ কোটি এবং পরিশোধিত মূলধন ৮৭ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের চেয়ে এক দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৯ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৯ টাকা ২০ পয়সা। দিনজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৯ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। এদিন ছয় লাখ আট হাজার ৭৬১টি শেয়ার মোট ২৫২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৫৬ লাখ পাঁচ হাজার টাকা। গত এক বছরে শেয়ারদর ছয় টাকা ৬০ পয়সা থেকে ২০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাববছরে ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। শেয়ারপ্রতি আয় লোকসান হয়েছে তিন টাকা ৩০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৪৬ পয়সা। কর-পরবর্তী লোকসান হয়েছে ২৮ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ২০১৫ সালের সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিট বিনিয়োকারীদের ১০  শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই বছর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল এক টাকা ৯ পয়সা এবং এনএভি ছিল ২৫ টাকা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে এক টাকা দুই পয়সা ও ২৬ টাকা ৫৮ পয়সা। ওই বছর কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল আট কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল সাত কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮০ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময়ে ইপিএস ছিল ২২ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে এক টাকা দুই পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত এনএভি দাঁড়িয়েছে ছয় টাকা ৩৯ পয়সা, যা একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ছিল সাত টাকা ১৪ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী লোকসান করেছে ছয় কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

কোম্পানিটির মোট আট কোটি ৭১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫৩টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।