Print Date & Time : 7 September 2025 Sunday 1:58 pm

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি সহজতর হোক

দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যে খাত সবচেয়ে বেশি অবদান রেখে চলেছে, সেটি হলো কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাত। এ খাতের একটি বড় অংশের উদ্যোক্তা হচ্ছেন নারী। কিন্তু এ খাতের উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা প্রাপ্তি সহজ নয়। নানা ধরনের শর্ত পূরণ করে তাদের এ ঋণ পেতে হয়। এবারের নারী দিবসে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজতর করে তোলার বিষয়ে শপথ নিতে পারে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

দৈনিক শেয়ার বিজে গতকাল ‘ব্যাংকে বাড়ছে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এক বছরের ব্যবধানে সিএমএসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৯৮৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এটি নিঃসন্দেহে ভালো খবর। তাতে ঋণপ্রাপ্তির পেছনে নানা ভোগান্তির গল্পও রয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের। তাদের ভাষ্য, তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তাই তারা চান ক্ষুদ্রঋণ চাই আমরা। কিন্তু এ ধরনের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যেসব শর্ত আরোপ করে, তা পরিপালন করা এমন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না বলেই তাদের দাবি। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা, জামানত, পরিচয়দাতা, জামিনদাতাসহ নানা ধরনের শর্ত। এমন শর্ত পরিপালনের বিষয়টিকে ঝামেলা মনে করেন নারী উদ্যোক্তারা। সে কারণে তারা ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণে নিরুৎসাহিত হন।

বিভিন্ন সময়ে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, নারী উদ্যোক্তারা ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় ভালো। যেহেতু তাদের ঋণের আকার ছোট, তাই তারা চান সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করে নিয়মিত গ্রাহক হিসেবে সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে। কাজেই নারী উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি সব শ্রেণির নারী উদ্যোক্তা যাতে সময়মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, সে জন্য সফল ও নিয়মিত ঋণ পরিশোধকারী নারী উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে কয়েকজনকে পুরস্কৃত করতে পারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এতে করে অন্যান্য নারী উদ্যোক্তারাও নিয়মিত ঋণের কিস্তি পরিশোধে উৎসাহিত বোধ করবেন বৈকি।

এ কথা অনস্বীকার্য যে, দেশে শ্রম শক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ এখনও পুরুষের তুলনায় অনেক কম। এ ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ মাত্র ৩৫ শতাংশের মতো বলে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান নির্দেশ করে। তাই শ্রমশক্তিতে নারীর কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্যও নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ানো আবশ্যক। সে জন্য নারীরা যাতে সহজে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, সে লক্ষ্যে তাদের জন্য সহজ শর্তে অর্থের জোগান নিশ্চিত করা প্রয়োজন বৈকি। ব্যাংক ও নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন বলেই বিশ্বাস।