নিজস্ব প্রতিবেদক: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিসিকে প্লট দেয়া হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নারী শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতে দ্রুত অগ্রসর হয়েছে। তিনি বলেন, দেশ উন্নয়নশীল হওয়ায় আমাদের সুযোগ-সুবিধা কমেনি বরং বেড়েছে, তবে আমাদের দায়িত্বও বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে শিল্পায়নে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে টিকে থাকতে হলে নারী উদ্যোক্তাদের নতুন নতুন রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসতে হবে।
‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস, ২০২১’ উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মুজিববর্ষে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পর্যটন ভবন মিলনায়তনে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও শিল্পসচিব কেএম আলী আজম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মফিজুর রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের জ্যৈষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। মূল প্রবন্ধের ওপর পর্যালোচনা করেন জায়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান এবং চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী। সেমিনারে আলোচনা সঞ্চালনা করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুধু মুনাফার কথা ভাবলেই হবে না, দেশপ্রেম ও মানবিকতা থাকবে হবে। নতুন নারী উদ্যোক্তাসহ শিল্প খাতে নারীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানে ব্যাংক ও আথিক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের তিনি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের নারীরা তাদের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে এগিয়ে রয়েছে এবং নারীরা তাদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রাম, সমাজ সংস্কার, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ছিল, এখনও আছে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনৈতিক টেকসই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থেকে পুরুষদের পাশাপাশি দেশের নারী জনগোষ্ঠীকে সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় নারীদের অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন সব ক্ষেত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারির মধ্যে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোর কেন অনীহা, তা খতিয়ে দেখা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিটাককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
শিল্পসচিব বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশের কর্মক্ষম নারী-পুরুষের সর্বোচ্চ সম্ভাবনাকে যদি কাজে না লাগাতে পারি, তাহলে ২০৪১ সালের উন্নত আয়ের শিল্পসমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারীর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটানোর পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নতুন শিল্পনীতি ২০২১ প্রণয়নে নারী উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা-সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা এসএমই ফাউন্ডেশনের অন্যতম অঙ্গীকার। এ লক্ষ্যে ফাউন্ডেশনের অ্যাডভাইজারি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে নতুন ব্যবসা সৃষ্টি, ঋণ সুবিধাপ্রাপ্তি, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, পণ্যের বাজার সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা সহায়তা পেয়ে থাকেন।