শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ গত শুক্রবার কয়েকটি দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর উচ্চ শুল্কারোপের সুপারিশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি এ সুপারিশ বাস্তাবায়ন করে তাহলে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সব কিছু করবে বলে সতর্ক করেছে চীন।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের ওই সুপারিশের জাবাবে গত শনিবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পরিচালক ওয়াং হেজুন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যদি চীনের স্বার্থ ক্ষুণœ হয়, তাহলে আমাদের অধিকার রক্ষায় যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা নেব।’
বিশ্বব্যাপী ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের অতি সরবরাহ রোধ করার উদ্দেশে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ একটি সুপারিশ করেছে। গত মাসে প্রেসিডেন্টের কাছে পেশ করা দুটি প্রতিবেদন গত শুক্রবার প্রকাশ করা হয়। এতে বাণিজ্য সচিব উইলবার রস বেশকিছু সম্ভাব্য বিকল্পের কথা তুলে ধরেন। এসবের মধ্যে আছে আমদানি করা সব ইস্পাতের ওপর অন্তত ২৪ শতাংশ শুল্ক এবং চীন, রাশিয়া ও অন্য তিনটি দেশ থেকে আমদানি করা অ্যালুমিনিয়ামের ওপর অনুরূপ হারে শুল্কারোপ করা। অন্য যেসব বিকল্প রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর উচ্চমাত্রায় শুল্ক বা কোটা আরোপ করা।
অতিরিক্ত সরবরাহকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে দেশটির বাণিজ্য বিভাগ। রস বলেন, সস্তা আমদানি অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত পণ্যগুলোকে বিপন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষুণœ করছে। ইস্পাত ও অ্যালুমিনায়ামের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলো অনেক দিন ধরে উদ্বেগের বিষয় হয়ে থাকা চীনের অতি উৎপাদনের ব্যাপারটি চিহ্নিত করেছে।
তবে এ অভিযোগকে অস্বীকার করে ওয়াং বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ তদন্ত প্রতিবেদন ভিত্তিহীন। বাস্তাবতার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।
বিশ্বের প্রায় অর্ধেক ইস্পাতই উৎপাদন হয় চীনে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনে উৎপাদনের ফলে অতিরিক্ত সরবরাহে বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম পড়ে গেছে। এতে নিজে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকারীর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শুক্রবারের প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ১০টি ইস্পাত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে ৩৫ শতাংশ কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে মূলত চীনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদার চেয়ে বৈশ্বিক উৎপাদন সাত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া ২০১৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ছয়টি অ্যালুমিনিয়ামের স্মেলটার বন্ধ হয়ে গেছে এবং টিকে থাকা পাঁচটির মধ্যে শুধু দুটি সর্বোচ্চ ক্ষমতায় উৎপাদন করছে।
ইস্পাতের ব্যাপারে রস তিনটি সুপারিশ করেন সব দেশ থেকে আসা ইস্পাতের ওপর ২৪ শতাংশ শুল্ক, চীন, রাশিয়া, ব্রাজিলসহ ১২টি দেশ থেকে আমদানির ওপর ৫৩ শতাংশ শুল্ক অথবা সব দেশের ইস্পাতের ওপর কোটা।
অ্যালুমিনিয়ামের ব্যাপারে তিনি সুপারিশ করেন সব দেশের ওপর ৭ দশমিক ৭ শতাংশ শুল্ক, সব দেশের জন্য কোটা অথবা চীন, রাশিয়া, হংকং, ভিয়েতনাম ও ভেনিজুয়েলার আমদানিতে ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ শুল্ক।
তবে যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে খুব কমই ইস্পাত আমদানি করে। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।