Print Date & Time : 12 August 2025 Tuesday 12:57 pm

নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা নির্ধারণের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিঝুম দ্বীপের ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চলের’ সীমানা আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিবেশ সচিব ও বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষকের প্রতি এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বন্ধের নির্দেশনা চাওয়ার রিট আবেদনে গতকাল রুলসহ এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।

নিঝুম দ্বীপের ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চলের’ সীমানা নির্ধারণে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্থানীয় সরকার সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নির্বাচন কমিশনের সচিব প্রধান বন সংরক্ষকসহ ১৪ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

হুমায়ন কবির বলেন, ‘এখনও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ না করার সুযোগ নিয়ে স্থানীয় ভূমিখেকোরা নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বনের জমি অবৈধভাবে দখল করছে। শুধু তাই না, জমি দখলে নিয়ে তারা সেখানে বিভিন্ন কাঠামোও নির্মাণ করছে। এতে নিঝুম দ্বীপের প্রাকৃতি-পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য আজ  হুমকির মুখে।’

এ আইনজীবী বলেন, ‘আগামী ২০ সেপ্টেম্বর নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ। সীমানা নির্ধারণ না করা পর্যন্ত এ নির্বাচন স্থগিত চাওয়া হয়েছিল। আদালত সে বিষয়ে আদেশ দেননি।’

রিট আবেদনে বলা হয়, চল্লিশের দশকে নোয়াখালীর হাতিয়ায় দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠে নিঝুম দ্বীপ। ১৯৭৪ সালে বন বিভাগ এ দ্বীপটিতে বনায়ন শুরু করে। পরবর্তীকালে দ্বীপটির প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য বিবেচনায় সরকার একে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালে বন আইন, ১৯২৭-এর ২০ ধারায় সরকার পুরো নিঝুম দ্বীপকে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করে।

আইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বন নিঝুম দ্বীপে জনসাধারণের অবাধ প্রবেশ, কাঠামো নির্মাণ নিষিদ্ধ। কিন্তু ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নিঝুম দ্বীপের সংরক্ষিত বন নিয়ে ১১ নং নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।

পরবর্তীকালে ২০১২ সালে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় দুটি গেজেটের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত বন ঘোষণা করে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সংরক্ষিত বনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি। এ কারণে সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদকে আলাদা করে সীমানা নির্ধারণ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নোটিস পাঠান স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী রফিক উদ্দিন এনায়েত।

কিন্তু বিবাদীরা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গত রোববার হাইকোর্টে জনস্বার্থে এ রিট আবেদন করেন তিনি।