নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, আমরা অতীতে দেখেছি, আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি না দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে তাদের সহযোগী হয়েছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে তারাও দুষ্কৃতিকারী হয়েছেন। ফলে এ বাজার থেকে যারা পুঁজি সংগ্রহ করবেন বা পুঁজি জোগান দেবেন তারা আশা হারিয়েছেন। একই সঙ্গে আমাদের পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে যে কার্যকর ভূমিকা রাখার কথা ছিল তা রাখতে পারেনি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাজার মূলধন এবং জিডিপির অনুপাত এই মুহূর্তে ৮ শতাংশের নিচে। যেখানে আমাদের পার্শ্ববর্তী কিছু দেশ বিশেষ করে পাকিস্তানের প্রায় ১০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কাতে ১৫ শতাংশ, ভিয়েতনামে ৪১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়াতে ৪৪ শতাংশ এবং ভারতে এটির পরিমাণ ১২০ শতাংশ। তবে আশার কথা হচ্ছে, আমরা একটি পরিবর্তনের সুবাতাস পাচ্ছি। আমরা এমন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছি যেখানে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের একটি বিরল সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের নতুন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। রেগুলেটরি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। অতীতের অনিয়ম ও দুর্নীতিগুলো তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফলে আমরা আশাবাদী যে একসঙ্গে কাজ করলে এই মার্কেটের বর্তমান দুর্দশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।
তিনি বলেন, মার্কেট নিয়ন্ত্রণে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে তাদের অভ্যন্তরীণ দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। সেবা প্রদানের যে দায়বদ্ধতা সেটি নির্ধারণ করার সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশাসন এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি রেগুলেটরি মার্কেটের দৈনন্দিন কার্যক্রমে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের বাজার ব্যবস্থায় স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ভূমিকা কি হবে সেটা নির্ধারণ করার সময় এসেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের আঞ্চলিক সফল মার্কেটগুলো রয়েছে সেগুলোর অভিজ্ঞতা অনুসরণ করতে পারি। এই মুহূর্তে মার্কেট দুর্বল অবস্থায় আছে। ফলে স্বল্প সময়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সেটি ভাবতে হবে।
সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মমিনুল ইসলাম বলেন, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যেখানে আমাদের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে পারস্পরিক পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে সেটি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। তবে হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি, পরিবর্তনের বাতাস বইতে শুরু করেছে। আশা করি, সবার চেষ্টায় নতুন একটি গল্প আমরা তৈরি করতে পারব। যেখানে একটা শক্ত, সক্ষম, কার্যকর ও স্বচ্ছ শেয়ার মার্কেট আমরা উপহার দিতে পারব।