নিজস্ব প্রতিবেদক:‘সুস্থ ও মেধাবী জাতি গঠনে দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। বাজারে ভেজাল খাদ্যের বিক্রি বন্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’ গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকা’স ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের আওতায় আয়োজিত এক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ভোক্তা যে পণ্যটি গ্রহণ করছেন, সেটির গুণগত মান সম্পর্কে অসচেতন। এক্ষেত্রে ভোক্তার সচেতনতা অনেক জরুরি। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে এই প্রকল্পটি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে। অনিরাপদ খাদ্য কৃষক, ব্যবসায়ী, ভোক্তা সবার জন্যই ক্ষতিকর। খাবার সময় আমাদের খাদ্যমান যাচাই-বাছাই করা উচিত।
তাজুল ইসলাম বলেন, স্ট্রিট ফুড চাইলেই বন্ধ করা যাবে না। তবে এগুলোকে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ে আসার সুযোগ রয়েছে। সিটি করপোরেশন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ল্যাবরেটরি নির্মাণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখছে। খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং ভেজাল রোধে এই ল্যাবটিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও লোকবল রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ, ভেজাল খাদ্য বন্ধ, সাধারণ মানুষকে খাদ্য-পুষ্টি বিষয়ে সচেতন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অধিকতর কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। মানুষের কল্যাণ ও সার্বিক উন্নয়নে সরকারের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান অতিথি আরও জানান, অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ খাদ্যের গুণগত মান নষ্ট করে এবং মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ বিষয়ে কৃষকদেরও বেশি সচেতন করতে হবে। কীটনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে অনেকে অবগত নন। উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থাপনা একটি জটিল বিষয়। সেজন্য প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর গরমকালে দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ লক্ষ করা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। অনিরাপদ পানি ডায়রিয়ার একটি কারণ উল্লেখ করে তিনি জানান, তার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহে কাজ চলমান।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আসন্ন মৌসুমে এডিসসহ অন্যান্য মশা নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে সভা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এডিস মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কাছে প্রয়োজনীয় কীটনাশক, জনবল ও যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত এনে ভ্যান লিউয়েন, রবার্ট ডি সিম্পসন অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে অংশ নেন।
এছাড়া প্রকল্প পরিচালক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরীসহ এ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তা ও খাদ্যসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
