নিজস্ব প্রতিবেদক : জননিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের জারি করা নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচীর অনুষ্ঠান করা এবং নেতিবাচক বিবৃতি দেয়া অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সময় ‘সংকোচনের’ প্রতিবাদে রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর রাজধানীর শাহবাগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
এ বিষয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যে নির্দেশনা জারি করেছিল, সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান করা ছিল হঠকারী ও দুঃখজনক। তাদের এই আচরণে সরকার খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উদীচীর অনুষ্ঠানে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত, তার দায়দায়িত্ব কে নিতÑএ প্রশ্ন রেখে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি নিয়ম বা নির্দেশ না মেনে অনুষ্ঠান যারা করবেন, তাদের সেই দায়দায়িত্ব নিতে হবে।’
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে এবং যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। গুলশানের হোলি আর্টিজান, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দান ও সিলেটে ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং জনগণের জীবন বাঁচিয়েছেন। প্রতিটি অনুষ্ঠানে সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সব সময় সতর্ক থাকায় নিকট অতীতে বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি হামলা বা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটতে পারেনি।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৯৩ সালে (১৪০০ বঙ্গাব্দে) বাংলা শতবর্ষ বরণ করার সময় খালেদা জিয়া সরকার বাধা দিয়েছিল। তাদের বাধা দেয়ার উদ্দেশ্য নিরাপত্তাজনিত নয়, বরং বাঙালির সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক এই উৎসবকে নিরুৎসাহিত করা। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব সংগঠন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পহেলা বৈশাখ উদ্?যাপন করেছিল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপত্তা দেয়া সরকারের কর্তব্য। আশা করব, এ ক্ষেত্রে সবাই সব সময় সহযোগিতা করবেন, যাতে আনন্দের অনুষ্ঠান বিষাদে পরিণত না হয়ে যায়।’
আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে যথাযথভাবে পহেলা বৈশাখ উদ্?যাপন করা হয় বলে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পহেলা বৈশাখ উদ্?যাপনের জন্য বাংলা নববর্ষ ভাতা চালু করেছে।
তার সরকারের সময়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেসকো ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।