নির্বাচনের আগে ডলারের বাজার নিয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নয়: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলারের বাজারে চলছে অস্থিরতা। ঘোষিত দামও মানছে না ব্যাংকগুলো। খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলারের বাজার নিয়ে কথা বলতে দেখা করেন বেসরকারি খাতের শীর্ষ পাঁচটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি)।

তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে ডলার বাজার নিয়ে নীতিগত কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলে এমডিদের জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠকে উপস্থিত থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ তথ্য জানান। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্র জানায়, আর্থিক অবস্থার নানা সূচক, মূল্যস্ফীতি, ডলার বাজার, প্রবাসী আয়, করপোরেট সুশাসনসহ নানা বিষয় আলোচনা হয়। এমডিরা বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে ডলার বাজারসহ কিছু বিষয়ে পরামর্শ চান গভর্নরের কাছে। গভর্নর তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেননি।

তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের কোনো সংস্কার বা নীতির পরিবর্তন হবে না। কোনো ধরনের অস্থিরতা যাতে না হয়, সেজন্যই এই সিদ্ধান্ত। এজন্য ডলার বাজার নিয়েও সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আনবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চলছে, সেভাবেই চলতে থাকবে। পাশাপাশি সময়ে সময়ে যেভাবে ডলারের দামে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, তাও অব্যাহত থাকবে বলে ব্যাংকগুলোর এমডিদের জানান গভর্নর।

এছাড়া ডলার রেটের বিষয়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে বলেছেন গভর্নর। ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডারইনভয়েসিং যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়। এসএমইতে ঋণ বাড়াতেও তাগিদ দেয়ার কথা বলেন গভর্নর।

সভায় যোগ দিয়েছিলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আরএফ হোসেন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ইস্টার্ণ ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার, সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন ও প্রাইম ব্যাংকের এমডি হাসান ও. রশীদ।

এর আগে বেশি দামে ডলার বিক্রি করার কারণে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক মালিকদের সঙ্গেও একটি সভা করা হয়।

ওই সভা সূত্রে জানা যায়, সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ডলারের বাজার পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ও ব্যাংকের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। সভায় বলা হয়, ডলারের সংকট এখন কমে এসেছে, সরবরাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। তাই কোনো ব্যাংক যাতে ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় বিএবির পক্ষ থেকে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপত্তি জানালে হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন ব্যাংক মালিকরা। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানো হলে হুন্ডিতে ডলারের দাম বাড়বে।