নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্দেশনা পালন না করলে তাদের ওপরও আইন প্রয়োগে পিছপা হবে না নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এ নির্দেশ দেন।
আলমগীর বলেন, ‘এরই মধ্যে কিছু কিছু এলাকা আমাদের নজরে আসছে, নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে চলছেন না অনেকেই। এটি আমরা মোটেও মেনে নিতে রাজি নই। যদি কেউ এ ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে থাকেন তাহলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং তা যদি তারা করতে ব্যর্থ হন, আর তার কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে আসে, তাহলে আইন প্রয়োগ করতে পিছপা হব না।’
তিনি জানান, ‘নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে যে আইন আছে, তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জন্যও বিধি ও আইন রয়েছে।’ ডিসি-এসপিরা ব্যর্থ হলে সে আইন প্রয়োগের কথা বলেন এ নির্বাচন কমিশনার।
রাজনৈতিক দলের লোকেরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন, তাদের উদ্দেশে ইসি কী বলবে, জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলব। সেখানে এই মেসেজ দেয়া হবে কঠোরভাবে; যে সে যেই হোক না কেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হোক, ভোটারই হোক, প্রার্থী হোক বা অন্য কোনোÑযেই হোক তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন এবং কোনোক্রমেই যেন আচরণবিধি ভঙ্গের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যবস্থা নেবেন।
‘শুধু নির্বাচনের আচরণবিধি নয়, কর্মকর্তাদের জন্য আইন রয়েছে। যদি দেখা যায়, কোনো কর্মকর্তা কোনো নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করছেন বা অবহেলা করছেন, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব,’ বলেন আলমগীর।
জাতীয় পার্টি সংসদের হুইপের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ দিয়েছে। এ ব্যাপারে ইসি আলমগীর বলেন, ‘এটা তারা দিয়ে গিয়েছে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশের কাছে। রিপোর্ট চেয়েছি। রিপোর্ট দিতে হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেব।’
আইন অনুযায়ী কথা কতজন শুনছেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন হবে। হয়তো দু-চারটি জেলা পরিষদ থেকে এমন অভিযোগ আসতে পারে। অবশিষ্টগুলো থেকে অভিযোগ আসেনি বা হয়নি। আপনাদের মিডিয়াতেও আসেনি। তারমানে হলো, তারা অবশ্যই শুনছে। আমাদের দেশে সংসদ সদস্য ৩০০ জন। ৩০০ জনই এমন করছেন না, হয়তো দুই, চার, পাঁচজন এমন করছেন। আমরা নির্দেশ দিয়েছি, যদি আইন ভঙ্গ করে, তাহলে তাকে দ্রুত এলাকা ছাড়াতে হবে। তিনি এলাকায় থাকতে পারবেন না।’
তিনি আরও বলেন, সরকারি দলের প্রতি আবেদন হচ্ছে, তারা তো দেশ চালায়। তারা মানতে আরও বাধ্য। আমরা যেটা বলব সাংবিধানিকভাবে সেটা মানা তাদের দায়িত্ব। এছাড়া সরকারি দল হিসেবে মানতে বাধ্য। সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বার্তা দিয়েছি। আমরা আশা করি, আপনার দলীয় নেতাকর্মীদের যেন আচরণবিধি লঙ্ঘন না করে সে বার্তা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জানিয়েছি।